তেল উৎপাদনের কোটা নিয়ে সৌদি আরব আর আমিরাতের মতভেদ প্রকাশ্য তিক্ততায় রূপ নেওয়ায় ওপেক জোটভূক্ত দেশের আলোচনা স্থগিত হয়েছে। ফলে জ্বালানির বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ছয় বছরে সর্বোচ্চ।

ওপেক প্লাস গোষ্ঠীতে যে ২৩টি দেশ অন্তর্ভুক্ত, তার মধ্যে রয়েছে মূল ওপেকের সদস্য দেশগুলো এবং ওপেকের সদস্য নয় এমন তেল উৎপাদনকারী সহযোগী দেশগুলো, যাদের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, ওমান ও বাহরাইনসহ ১০টি দেশ।

আলোচনা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেওয়ায় বিশ্বের বড় তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর এই জোট টিকবে কিনা তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। মহামারির দেড় বছরে এই গোষ্ঠী তেলের সরবরাহ অক্ষুণ্ন রাখার কাজ পরিচালনা করেছে।

ওপেক প্লাস জোটের নেতা সৌদি আরব ও রাশিয়া জ্বালানি তেল উৎপাদনের মাত্রা কম রাখার মেয়াদ আরও আট মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে সংযুক্ত আরব আমিরাত তা প্রত্যাখান করার পর থেকেই গত সপ্তাহে তৈরি হয় এই সমস্যা।

মহামারিতে দেখা দেওয়া অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জোট কর্তৃক নির্ধারিত তেল উৎপাদনের মাত্রা আরও ৮ মাস বাড়ানোর বিরোধিতা করে আমিরাত চাচ্ছে ​উৎপাদনের যে মাত্রাকে মূল ভিত্তি হিসেবে এখন ধরা হচ্ছে সেটা পুনর্নিধারণ করা হোক। 

অর্থাৎ উৎপাদন কতটা কমানো বা বাড়ানো হবে তা হিসাব করার জন্য যে মাত্রাকে ভিত্তি হিসাবে ধরা যাচ্ছে, আলোচনা করে তা বাড়ানো হোক, যাতে তেলের উত্তোলন আরও বাড়ানোর ব্যাপারে তাদের স্বাধীনতা থাকে। কিন্তু সৌদি আরব ও রাশিয়া এর বিপক্ষে।

সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের জ্বালানি মন্ত্রীরা যখন প্রকাশ্যে তাদের মতভেদ ব্যক্ত করেন তখন তেল উৎপাদক এই গোষ্ঠীর আলোচনা একটা অস্বাভাবিক দিকে মোড় নেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশানাল স্টাডিসের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা বেন কাহিল বিবিসিকে বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘তাদের এই মতভেদ সবাইকে চমকে দিয়েছে, যদিও হয়ত এই বিভেদটা অবশ্যসম্ভাবী ছিল।’

তিনি বলেন, ​‘ওপেকের কোটা আমিরাতের উৎপাদন সক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমিরাত তেল উৎপাদন শিল্পে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। এখন চাহিদা আবার বাড়তে শুরু করেছে। ফলে নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে না পেরে গত বছর হতাশ হয়েছে দেশটি।’

এএস