শশী থারুর-সুনন্দা পুস্কর

ভারতের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের লোকসভা এমপি এবং দেশটির সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী থারুরকে (৬৫) তার স্ত্রী সুনন্দা পুস্করের হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। বুধবার দিল্লির একটি আদালত তার মুক্তির আদেশ দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি অনলাইন।

২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি দিল্লির একটি বিলাসবহুল হোটেলের সুইটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় শশী থারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুস্করকে (৫১)। ওই সময় শশী থারুরের সরকারি বাসভবনের সংস্কারকাজ চলার কারণে সেই হোটেলে উঠেছিলেন সুনন্দা।

পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ ছিল, বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে সুনন্দাকে, কিন্তু ময়না তদন্তে তার দেহে বিষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর এ বিষয়ে একটি হত্যা মামলা করে দিল্লি পুলিশ।

২০১০ সালে বিয়ে করেন শশী থারুর-সুনন্দা পুস্কর। বিয়ের মাত্র চার বছরের মাথায় সুনন্দার মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গণে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় এবং অভিযোগের আঙুল ওঠে শশী থারুরের দিকে।

এই অভিযোগ আরও দৃঢ় হয় মৃত্যুর আগে সুনন্দার সর্বশেষ টুইটে, যেখানে তিনি সন্দেহ জানিয়েছিলেন- পাকিস্তানের এক সাংবাদিকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রাখছেন থারুর।

দিল্লি পুলিশের মামলায় হত্যার প্রধান ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে শশী থারুরের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে তার আইনজীবী আদালতে বরাবরই দাবি করে আসছিলেন, যৌতুক, দাম্পত্য সম্পর্ক বা বিবাহবির্ভূত কোনো সম্পর্ক- কোনো ইস্যুতে এই দম্পতির মধ্যে কখনও কলহ হয়েছে- এমন কোনো অতীত রেকর্ড নেই।

আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এর আগে থারুর বলেছিলেন, তার স্ত্রী সুনন্দার মৃত্যু হত্যাকাণ্ড বা আত্মহত্যার কোনো ঘটনা নয়, বরং দুর্ঘটনা; কারণ সুনন্দা আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

রোববারের শুনানিতে বিচারক বলেন, সুনন্দার মৃত্যুতে শশী থারুরের সরাসরি বা দূরবর্তী- কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

রোববারের রায়ের পর আদালতে দাঁড়িয়ে শশী থারুর বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ, মহামান্য আদালত। সাত বছর ধরে যে নরক যন্ত্রণা বোধ করছিলাম আজ তা থেকে মুক্তি মিললো। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।’

পরে এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘স্ত্রীর মৃত্যুর পর এমনিতেই আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলাম; কিন্তু সেই বিধ্বস্ততা আতঙ্কে রূপ নেয় যখন মিডিয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের লোকজন এই হত্যায় আমাকে সন্দেহভাজন হিসেবে প্রচার করা শুরু করে।’

‘আমি তাদের এসব ভিত্তিহীন অভিযোগে প্রতিমুহূর্তে বিপর্যস্ত হয়েছি, কিন্তু তারপরও আদালত ও ন্যায়বিচারের প্রতি আমার আস্থা ছিল এবং তার ফল আজ পেলাম।’

সূত্র : এনডিটিভি অনলাইন

এসএমডব্লিউ