শুরু হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সকাল এগারোটায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ ভারতে শুরু হবে বিশ্বের বৃহত্তম করোনা টিকাদান কর্মসূচি।
শনিবার সকাল এগারোটায় শুরু হয়ে ভারতে প্রথম দিনের টিকাদান কর্মসূচি চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। প্রথমদিনের জন্য তালিকাভূক্ত সবাইকে টিকা নিতে ফের অনুরোধ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন আহ্বান জানিয়ে অবশ্য এও বলেছে যে, টিকা নেওয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ টিকাদান কেন্দ্রে পৌঁছেও মত পাল্টালে তার টিকা না নিয়ে ফিরে আসার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতে প্রথম ধাপে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় রয়েছেন দেশটির এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মী। এরমধ্যে অন্তত তিন লাখকে তিন হাজার ছয়টি কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ভারত সরকারের।
অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রনেতাদের অনেকে সবার আগে টিকা নিলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি অবশ্য এদিন শুধু টিকাদান কর্মসূটির উদ্বোধন করবেন। তিনি আগেই টিকা নেবেন না বলে তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রাজনীতিকদের উদ্দেশে প্রভাব খাটিয়ে বা অন্য উপায়ে আগে টিকা নিতে সতর্ক করেছেন মোদি। তবে এমপিদের মধ্যে শুরুর দিন শনিবার প্রথম টিকা নেবেন উত্তরপ্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগরের মহেশ শর্মা।
পেশায় চিকিৎসক ওই আইনপ্রণেতার নিজস্ব হাসপাতাল থাকায় তিনি শুরু থেকেই কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় যুক্ত ছিলেন। তাই তার নাম টিকাদান কর্মসূচির প্রথম তালিকায় এসেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
দিল্লিতে প্রথম দিনে ৮১টি কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টিতে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া দিল্লির ৭৫টি কেন্দ্রে দেওয়া হবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার উদ্ভাবিত ও ভারতের সেরামের তৈরি কোভিশিল্ড।
যারা করোনার টিকা নিচ্ছেন তাদের প্রত্যেকে যেন ২৮ দিনের ব্যবধানে একই টিকার দ্বিতীয় ডোজটি পান, তা নিশ্চিত করতে রাজ্যগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
অসমের ৬৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৯টিতে কোভিশিল্ড এবং ছয়টিতে কোভ্যাক্সিন টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। পশ্চিমবঙ্গে টিকা দেওয়া হবে ২১০টি কেন্দ্রে।
টিকা নেওয়ার আগে আধার অথবা অন্য ১২টি পরিচয়পত্রের (ড্রাইভিং লাইসেন্স, ব্যাংক/ ডাকঘরের পাসবুক, প্যান বা ভোটার কার্ড) যে কোনও একটি দেখালেই চলবে বলে সরকারি নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।
টিকা নেওয়ার পর প্রতি একশো জনের মধ্যে একজনের সামান্য শারীরিক অসুবিধা হতে পরে বলে আগেই সতর্ক করে দিয়েছে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই প্রতিটি কেন্দ্রে রাখা হয়েছে একটি পর্যবেক্ষণ কক্ষ।
টিকা নিয়ে আধ ঘণ্টা বসতে হবে পর্যবেক্ষণ কক্ষে। ইনজেকশন নেওয়ার জায়গায় ব্যথা, শক্ত হয়ে ফুলে ওঠা, মাথা ঘোরা, বমি ভাবের মতো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ভয়ের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন চিকিৎসকরা।
কোন কোন বিশেষ অবস্থায় প্রতিষেধক নেওয়া উচিত নয়, কাদের টিকাকরণের সময়ে বিশেষ যত্ন নিতে হবে—এই সব নিয়ে শুক্রবারও একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রকাশ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণলায় ও দফতর।
এএস