যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্বে ট্রাম্প যুগের অবসান হলো। বিতর্কিত ও নানা কারণে সমালোচিত বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট আক্ষরিক অর্থেই বিদায় নিলেন। বুধবার দিনের শুরুতে সকাল ৮টায় ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পসহ হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন তিনি।

হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়েই শেষবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওঠেন ট্রাম্প-মেলানিয়া। এরপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় মেরিল্যান্ডে অবস্থিত জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ সামরিক ঘাঁটিতে। সেখানে ট্রাম্পের জন্য বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে।

জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছে প্রেসিডেন্টে হিসেবে শেষবার ভাষণ দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে ভাষণ দেওয়ার পর ফ্লোরিডার পাম বিচের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি।

জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজে সংক্ষিপ্ত ভাষণে ট্রাম্প তার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ সময় শুভ কামনা জানিয়ে বাইডেন প্রশাসনের উজ্জ্বল সাফল্য কামনা করেন তিনি।

আমি আপনাদের বলছি, এই দেশের ভবিষ্যৎ কখনই এর চেয়ে ভালো হবে না।

হোয়াইট ছাড়ার আগে ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প

হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগে ট্রাম্প বলেন, ‌‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়া ছিল অনেক সম্মানের এক বিষয়। আমি সবসময় আপনাদের জন্য লড়বো। আমি আপনাদের দেখবো, আপনাদের কথা শুনবো। আমরা আবারও কোনো না কোনো কাঠামোতে ফিরে আসবো। এবং আমি আপনাদের বলছি, এই দেশের ভবিষ্যৎ কখনই এর চেয়ে ভালো হবে না। তবে আমি নতুন প্রশাসনের জন্য সফলতা কামনা করছি।’

পরিবারের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তারা চমৎকার কাজ করেছেন। সন্তানদের ব্যাপারে মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট বলেন, মানুষের ধারণা নেই, তার পরিবার কত কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তারা অনেক সহজ-সরল জীবন কাটাতে পারতো। কিন্তু তারা চমৎকার কাজ করেছে। 

মেলানিয়া ট্রাম্পকে সংক্ষিপ্ত ভাষণের সুযোগ দেয়ার আগে হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোসের ভূয়সী প্রশংসা করেন ট্রাম্প। ফার্স্ট লেডি সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন এবং একজন সুন্দরী নারী। মানুষের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় তিনি।’

কিন্তু কয়েকদিন আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক জরিপে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে কম জনপ্রিয়তা নিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়ছেন মেলানিয়া। 

ট্রাম্পের পরপরই বক্তৃতা দেন ফার্স্ট লেডি। তিনি বলেন, আপনাদের ফার্স্ট লেডি হতে পারাটা আমার জন্য বিরাট সম্মানের ছিল। আপনাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। মেলানিয়ার বক্তৃতা শেষ হওয়ার আগে মাইক্রোফোন নেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, আর কি বলার আছে তাই না? এটাই মধুর সত্য। দারুণ কাজ করেছো।

বাইডেন প্রশাসনের জন্য শুভ কামনা জানালেও যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার রদবদলের কোনো প্রথাই মানেননি ট্রাম্প। বুধবার যুক্তরাষ্ট্র সময় দুপুর ১২টায় বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানে যে থাকবেন না, সেই ঘোষণা তিনি অনেক আগেই দিয়েছিলেন।

বিদায়ী ভাষণে নির্বাচিত হওয়ার আগে যা করতে চেয়েছিলেন; তা সফলভাবে করতে পেরেছেন বলে বগল বাজালেও জো বাইডেনের নাম একবারের জন্য উচ্চারণ করেননি ট্রাম্প।

ট্রাম্প এখন ফ্লোরিডার পাম বিচ দ্বীপের মার-আ-লাগোতে স্থায়ী আবাস গড়বেন। সমুদ্র তীর ঘেঁষা এই ভবনটি বরাবরই ট্রাম্পের খুব প্রিয়। ক্ষমতায় থাকার চার বছর এই ভবনে অনেক সময় কাটিয়েছেন তিনি। 

এএস/এসএস