ক্ষমতাসীন জোট সরকার থেকে সম্প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি তার দলের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার কয়েকদিন পর পার্লামেন্টের আস্থা ভোটে টিকে গেলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিউসেপ কন্তে।

বিবিসি এ খবর জানিয়ে লিখেছে, উচ্চকক্ষ সিনেটে ১৫৬-১৪০ ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণিত হলেও ১৬ জন সিনেটর অনুপস্থিত থাকায় কন্তে যে সর্ম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পেরেছেন এমনটাও বলা যাচ্ছে না।

এর আগে গত সোমবার ইতালির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ চেম্বার অব ডেপুটিজ-এ হওয়া আস্থা ভোটে ৩২১-২৫৯ ভোটের ব্যবধানে সরকারে নিজের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে সক্ষম হন প্রধানমন্ত্রী গিউসেপ কন্তে।  

পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে টিকে গেলেও ইতালির বিরোধী দলগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী কন্তেকে পদত্যাগে বাধ্য করার জন্য তারা প্রেসিডেন্ট সেরজিও মাত্তেরেলাকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানানোর পরিকল্পনা করছেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী ইতালির প্রধানমন্ত্রী কন্তে একজন আইনের অধ্যাপক। ২০১৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। তখন থেকেই দেশটির ক্ষমতাসীন মধ্যপন্থী জোটের নেতৃত্বে রয়েছেন তিনি।  

তার জোট সরকারের প্রধান শরিক দল হলো রক্ষণশীল ফাইভ স্টার মুভমেন্ট (এম৫এস) এবং মধ্য-বামপন্থী ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডি)। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টিও জোটে ছিল। 

প্রধানমন্ত্রী গিউসেপ কন্তে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে বলেন, দেশ যখন মহামারি করোনাভাইরাস সংকটের মতো এক ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে তখন রাজনৈতিক সংহতি বজায় রাখাটা খুব জরুরি ছিল।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কন্তের সঙ্গে ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেজনি নানা বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

সিনেটের বিতর্কে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেজনি প্রধানমন্ত্রী কন্তেকে আরও সাহসী সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মার্শাল প্ল্যানের পর সবচেয়ে বড় সুযোগ হাতছাড়া করছে ইতালি।’  

কন্তের বিরুদ্ধে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো আগেই পূরণ করার করার অভিযোগ তুলেছেন মাত্তেও রেজনি। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২০৯ বিলিয়ন ইউরোর করোনার পুনরুদ্ধার তহবিলের ব্যয়ে প্রধানমন্ত্রী কন্তের পরিকল্পনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী রেনজি আপত্তি জানানোর পর দেশটির সরকারে এমন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। 

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী চান এই অর্থ ডিজিটাল অর্থনীতি ও গ্রিন এনার্জি খাতে ব্যয় করতে। ব্যয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনপ্রণেতাদের অগ্রাধিকার না দিয়ে টেকনোক্র্যাটদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ঘোরবিরোধী। 

ইতালিতে এর আগেও অনেক সংখ্যালঘু সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্ত জাতীয় জরুরি মুহূর্তে ইতালির মানুষকে যখন আংশিক লকডাউন করা হয়েছে তখন দেশটির এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা কন্তেকে দুর্বল করে দিয়েছে।  

সিনেটরদের উদ্দেশে কন্তে বলেন, ‘এমন সরকার পরিচালনা করাটা খুব কঠিন। কিন্তু অনেকে আমাদের এই পথে বারবার বাধা সৃষ্টি করছে। রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করার চেষ্টা করছেন তারা।’  

এএস