আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নতুন এক অধ্যায়ের যাত্রা শুরুর শপথ নিতে দেশটির পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে সস্ত্রীক পৌঁছেছেন জো বাইডেন। শপথ অনুষ্ঠানের অন্যান্য অতিথিরাও সেখানে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা ক্যাপিটলে পৌঁছেছেন। 

ট্রাম্পের উগ্রপন্থী সমর্থকদের সহিংসতার আশঙ্কায় হাজার হাজার সৈন্যের উপস্থিতিতে সামরিক ঘাঁটিতে রূপ নেয়া ওয়াশিংটনের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলের পেছনে সুউচ্চ মঞ্চে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্টের শপথ নেবেন জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।

বিবিসি বলছে, স্ত্রী জিল বাইডেনের হাতে হাত রেখে ক্যাপিটলে প্রবেশ করে জো বাইডেন। তবে ক্যাপিটলে যাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেই রাজধানীর একটি গীর্জায় অনুষ্ঠিত প্রার্থনা সভায় সস্ত্রীক যোগ বাইডেন। সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ নেতা সিনেটর মিচ ম্যাককোনেল এবং নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে জো বাইডেন দ্বিতীয় রোমান ক্যাথলিক প্রেসিডেন্ট। তার আগে ছিলেন ডেমোক্র্যাট জন এফ কেনেডি। ১৯৬৩ সালে আততায়ীদের গুলিতে কেনেডি নিহত হওয়ার পর এই গির্জাতেই তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

শপথ নেওয়ার পর পরই উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ক্যাপিটল হিল প্রাঙ্গণে শেষ মুহূর্তে তার প্রস্তুতি চলছে। এজন্য কর্মব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কর্মীরা। ধারণা করা হচ্ছে জো বাইডেনের ভাষণের ব্যাপ্তিকাল হবে ২০ মিনিট।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আগেই জানিয়েছিলেন যে তিনি জো বাইডেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না। তবে হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, যাওয়ার আগে ট্রাম্প জো বাইডেনকে লেখা একটি চিঠি রেখে গেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রথা অনুযায়ী এই চিঠি বাইডেনের ডেস্কে রাখা হবে, নিজের প্রথম কার্যদিবসে তা খুলবেন তিনি।

৩ নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল কখনওই মেনে নেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি হোয়াইট হাউজ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতেও তিনি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নাম উল্লেখ করেন নি।

এদিকে প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে দেওয়া হয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিকে। বুধবার অনেক ডেমোক্র্যাট সেখানে উৎসব করলেও জো বাইডেনের অনেক সমর্থক শহরটিকে এড়িয়ে চলছেন।

নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা যে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিলেন তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তারা। ট্রাম্পপন্থী অন্যান্য গ্রুপের নেতারা বলছেন যে তারাও শহরে যাচ্ছেন না। তাদের একজন বলেছেন, “কংগ্রেস সদস্য, বাইডেনের কর্মকর্তা এবং ন্যাশনাল গার্ড ছাড়া সেখানে আর কেউ থাকবে না।”

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার জন্য ক্যাপিটল ও তার আশপাশের এলাকায় ২৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করেছে ওয়াশিংটন ডিসি কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সহিংসতা ঠেকানোর চেষ্টায় শহরটি এক ধরনের লক-ডাউনে রয়েছে। এর ফলে জো বাইডেনের বহু সমর্থক সেখানে যাবেন না। তবে সন্দেহ নেই যে এর মধ্যেও অনেকেই সেখানে উপস্থিত থাকবেন।

এসএস/ এসএমডব্লিউ