ইরাকের রাজধানী বাগদাদের কেন্দ্রের তায়ারান স্কয়ারের একটি মার্কেটে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত ও আরও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে বাগদাদে বিরল এই আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। দেশটিতে চলতি বছরে সবচেয়ে বড় ধরনের আত্মঘাতী এই বোমা হামলার দায় এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী স্বীকার করেনি।

২০১৭ সালে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পরাজয়ের পর রাজধানী বাগদাদে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা একেবারে নজিরবিহীন। বাগদাদে সর্বশেষ আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে।

ইরাকের সামরিক বাহিনী বলছে, বাগদাদের কেন্দ্রের তায়ারান স্কয়ারের একটি জনাকীর্ণ মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড়ে ঢুকে দুই হামলাকারী বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের উড়িয়ে দেন। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, বিস্ফোরণে কমপক্ষে ২৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। 

মার্কেটের ছাদ থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, প্রথম বিস্ফোরণের পর ওই এলাকায় লোকজন জড়ো হলে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, বিস্ফোরণের পর সেখানে অনেক মানুষ আহত এবং মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তবে এসব ছবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

২০১৭ সালে মার্কিন সামরিক বাহিনী নেতৃত্বাধীন জোটের সহায়তায় ইরাকের সেনাবাহিনী জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূখণ্ড উদ্ধারের পর দেশটিতে এ ধরনের আত্মঘাতী বোমা হামলা দীর্ঘদিন দেখা যায়নি।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে রাজধানীর তায়ারান স্কয়ারে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হন।

বৃহস্পতিবারের এই হামলার পেছনে কারা জড়িত থাকতে পারে সেব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে ইরাকি কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করেনি। তবে এটিকে ‌‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তারা। সাধারণত জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের হামলাকেই দেশটিতে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যা দেয়া হয়।

ঘাঁপটি মেরে থাকা জঙ্গিরা দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন এলাকায় সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে এবং স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর ছোটখাট হামলা প্রায়ই চালাচ্ছে। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ফের ইরাকি ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে, এমনটি মনে করেন না দেশটির সরকারি এবং সামরিক কর্মকর্তারা। তবে এই গোষ্ঠীর অব্যাহত হামলায় ইরাকের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তারা।

এসএস