ভারত মহাসাগরের তলদেশে আগ্নেয়গিরি থেকে বেরিয়ে আসছে লাভাস্রোত। নেচার জিওসায়েন্স জার্নালের ছবি

এক মহাদৈত্য মাথাচাড়া দিয়েছে ভারত মহাসাগরের তলদেশে! আইফেল টাওয়ারের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ উঁচু একটি আগ্নেয়গিরির জন্ম হয়েছে এক সময়ের ফরাসি উপনিবেশ মাওট্টে দ্বীপ লাগোয়া ভারত মহাসাগরে। ২০১৮ সালে দ্বীপটিতে এক ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হওয়ার পর এই আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত শুরু হয়। 

সদ্যোজাত আগ্নেয়গিরিটির উচ্চতা ভারত মহাসাগরের তলদেশ থেকে ২ হাজার ৬৯০ ফুট। আন্তর্জাতিক ভূ-বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র এই খবর দিয়েছে। ফরাসি সরকারের অর্থসাহায্যে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিকরা গবেষণাটি চালান ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে।

গবেষণা পরিচালনা করতে বিজ্ঞানীরা ২০১৮ সালের ১৫ মে মাওট্টে দ্বীপে যে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়েছিল তার যাবতীয় তথ্য জোগাড় করেন। সেই ভূকম্পনের তীব্রতা রিখটার স্কেলে ছিল ৫ দশমিক ৮। সেই কম্পন বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই অনুভূত হয়েছিল।

পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা মহাসাগরের তলদেশে ৮ হাজার ৬০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মানচিত্র বানিয়ে ফেলেন ‘মাল্টিবিম সোনার’ যন্ত্র দিয়ে। প্রতিফলিত হয়ে আসা শব্দ তরঙ্গই জানিয়ে দেয় মহাসাগরের তলদেশের ভূপ্রকৃতি আর তার রদবদলের পরিমাণ ও চরিত্র।

মহাসাগরের সাড়ে তিন কিলোমিটার গভীরতা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় তারা বসিয়ে দেন ভূকম্পন মাপার বেশ কিছু যন্ত্র সিসমোমিটারও। এতেই মহাসাগরের তলদেশের ২০ থেকে ৫০ কিলোমিটার নিচ থেকে তারা প্রায় ১৭ হাজার ভূকম্পনের হদিশ পান।

যা ২০১৮ সালের মে মাসে মাওট্টে দ্বীপে হওয়া ভয়াবহ ভূকম্পনের উত্তরতরঙ্গ বা ‘আফটার শক’। এর আগে মহাসাগরের এতটা গভীরে কখনও কোনও ভূকম্পনের উত্তরতরঙ্গের হদিশ মেলেনি।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ওই উত্তরতরঙ্গের কারণ— ভূকম্পনের ফলে এলাকার টেকটনিক প্লেটগুলোর মধ্যে প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কি। সেই ধাক্কাধাক্কি থেকেই ভারত মহাসাগরের তলদেশে এই মহাদৈত্যাকার আগ্নেয়গিরির জন্ম হয়েছে। আনন্দবাজার।

এসএস