সিনেটে অভিশংসন ঠেকাতে আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও বিদ্রোহে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসনের পর সিনেট শুনানির আগে সাউথ ক্যারোলিনাভিত্তিক আইনজীবী বুচ বোয়ার্সকে নিয়োগ দেন তিনি।

আইনজীবী নিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) একথা জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

বুচ বোয়ার্স অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। অবশ্য আইনজীবী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ে অপেক্ষাকৃত অপরিচিত তিনি।

ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাবেক রিপাবলিকান গভর্নরদের পক্ষে সাউথ ক্যারোলিনার আদালতে লড়েছেন বুচ বোয়ার্স। এছাড়া সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন বলেও ওয়েবসাইটে উল্লেখ করেছেন তিনি।

একটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিতে ট্রাম্পকে বুচ বোয়ার্সের নাম সুপারিশ করেন সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম।

২০১২ সালে তৎকালীন গভর্নর নিকি হ্যালের পক্ষে আদালতে মামলা লড়েছিলেন বোয়ার্স। নিকি হ্যালের বিরুদ্ধে স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকার সময় অবৈধভাবে লবিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল। পরে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিলেন হ্যালে।

বুচ বোয়ার্স অবশ্য ‘কার্ল স্মিথ বোয়ার্স জুনিয়র’ নামেও পরিচিত। তিনি টুলেন ইউনিভার্সিটির ল স্কুল থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তার নিজস্ব একটি আইন প্রতিষ্ঠান আছে এবং এর পাশাপাশি তিনি ‘মিলার ল গ্রুপ’র সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট আছেন।

নিজের শখ সম্পর্কে ওয়েবসাইটে তিনি ‘পাখি শিকারের’ কথা উল্লেখ করেছেন।

পেশাগতভাবে বুচ বোয়ার্সকে ২০ বছরেরও বেশি সময় চেনেন সাউথ ক্যারোলিনার আইনজীবী জে বেন্ডার। তিনি নিজে ডেমোক্র্যাট সমর্থক। বোয়ার্সের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইনজীবী হিসেবে তিনি (বুচ বোয়ার্স) বেশ দক্ষ ও নীতিবান।’

রিপাবলিকান সিনেটর মাইক ব্রাউন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, আইনজীবী হিসেবে বোয়ার্সকে কিছুটা সময় দিতেই ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসন শুনানি শুরু হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত হয়ে লজ্জার বিরল ইতিহাস গড়েছেন ট্রাম্প। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মাত্র দু’জন প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত হয়েছিলেন।

কিন্তু মাত্র এক বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প লজ্জাজনকভাবে দু’বার অভিশংসিত হয়েছেন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিশংসনের অভিযোগে বলা হয়, তিনি বারবার নির্বাচনে জয়ের মিথ্যা দাবি করেছেন এবং সমর্থকদের গত ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও সহিংসতায় ইন্ধন দিয়েছেন।

শুধু তাই নয়, নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করতে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান দলীয় প্রতিনিধিকে চাপ প্রয়োগও করেছিলেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের ভাগ্য এখন ঝুলে আছে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের হাতে। সিনেটে অভিশংসিত হলে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না তিনি।

সূত্র: রয়টার্স

টিএম