পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে আক্রমণ করে মন্তব্য করার সময় ‘যৌনকর্মী’ শব্দ ব্যবহার করা নিয়ে অস্বস্তিতে থাকা বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখা অবশেষে ক্ষমা চেয়েছে। সায়নী ঘোষও একে স্বাগত জানিয়েছেন।

বিজেপি যুব মোর্চার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘বিজেপি এই ধরনের মন্তব্য সমর্থন করে না। দলের যিনি এমন কথা বলেছেন, তিনি ভুল করেছেন। এ জন্য দলের পক্ষ থেকে যাদের অপমান করা হয়েছে, তাদের এবং তাদের পরিবারের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। একই সঙ্গে এই মন্তব্যের জন্য রাজ্যবাসীর কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’

সম্প্রতি সায়নী ঘোষের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে কয়েক বছর আগের একটি টুইটে সনাতন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। তার জের ধরে বুধবার পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ এলাকার এক সভায় সায়নীর বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপি যুব মোর্চার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ।

ওই সভায় সৌমিত্র বলেন, ‘দক্ষিণ কলকাতায় কিছু ফিল্ম আর্টিস্ট আছেন, যারা শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা করে স্যালারি পান… যারা শিবলিঙ্গকে বা মা মনসাকে অপমান করে, তারা আসলে যৌনকর্মী।’

সৌমিত্র এই মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হন সায়নী। পরে আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘মানুষের বৃত্তিকে গালাগালির পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার একটা নতুন প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি। কেউ কেউ ভাবছে, ‘হিজড়ে’ বা ‘যৌনকর্মী’ বলে দিলেই মানুষকে অপমান করা যায়; কিন্তু আমি সব পেশাকে সমান নজরে দেখি।’

গত মাসে সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা মন্ডলের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানে সৌমিত্র খাঁ মানসিক ভাবে বিপর্যন্ত ইঙ্গিত করে সায়নী আরো বলেন, ‘রাগে, শোকে তার ভারসাম্য হারানোটাই স্বাভাবিক।’

ইতিমধ্যেই সায়নী বনাম তথাগত বিবাদ নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। তারই মধ্যে সৌমিত্রর মন্তব্য ও সায়নীর প্রতিক্রিয়া জানার পরে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে রীতিমতো ‘অস্বস্তিতে’ ছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব; তা কাটাতেই শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষমা চান শমীক। বিজেপির আশা, এই বিতর্ক এখানেই শেষ হয়ে যাবে।

সায়নী অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, সৌমিত্রর মন্তব্য নিয়ে তিনি কোনও আইনি পদক্ষেপ নিতে চান না। বিজেপির পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়াকে স্বাগত জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘বিজেপি নেতারা যেটা করলেন, তাতে একটা জ‌িনিস প্রমাণিত হল। সেটা হল এই যে, ক্ষমা চাইলেই কেউ ছোট হয়ে যায় না। আজও এটা সত্যি।’

সূত্র: আনন্দবাজার

এসএমডব্লিউ