যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর থেকে দেশজুড়ে বেশ দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসের নতুন এই ধরনটি। এমনকি ব্রিটেনের বিভিন্ন অঞ্চলে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণও হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ।

স্থানীয় সময় সোমবার (৬ ডিসেম্বর) তিনি একথা বলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তবে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মহামারির পুনরুদ্ধার কার্যক্রম থেকে ব্রিটেনকে ছিটকে ফেলবে কি না, সেটি বিচার করার সময় এখনও আসেনি।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত করোনার নতুন এই ধরন ছড়িয়ে পড়া রুখতে ব্রিটিশ সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পক্ষ নিয়ে সোমবার দেশটির পার্লামেন্টে তিনি বলেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় চেষ্টার কোনো কমতি রাখছে না তার সরকার। একইসঙ্গে বিজ্ঞানীরাও ভাইরাসের এই ধরনটি নিয়ে গবেষণা করছেন এবং কতটা বিপজ্জনক হতে পারে সেটি বুঝে ওঠার চেষ্টা করছেন।

ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ব্রিটেনে এখন মোট ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৩৬ জন। এর মধ্যে ইংল্যান্ডে ২৬১ জন, স্কটল্যান্ডে ৭১ জন এবং ওয়েলসে ৪ জন। তিনি বলছেন, ‘আক্রান্তদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন, যাদের বিদেশে ভ্রমণের কোনো ইতিহাস নেই। তাই আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, ইংল্যান্ডের বহু এলাকায় এখন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ হচ্ছে।’

এদিকে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় বর্তমানে নতুন করে আর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করার প্রয়োজন নেই বলে সোমবার জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কিন্তু আগামী বড়দিনের আগে এই বিধিনিষেধ বাতিলের বিষয়টিও প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছে যুক্তরাজ্য। গত মাসের শেষের দিক থেকে দেশটির সব ধরনের যানবাহন, দোকান, ব্যাংক ও সেলুনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়।

এছাড়া বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর দুই দিনের মধ্যে পিসিআর টেস্ট করানো এবং টেস্টের রিপোর্ট আসার আগ পর্যন্ত তাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বরিস জনসন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫১ হাজার ৪৫৯ জন এবং মারা গেছেন ৪১ জন।

মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ২৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৬ জন মারা গেছেন।

টিএম