সোমবার একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের অং সান সু চি’র সরকারকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, অং সান সু চিসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে অনেক শীর্ষ নেতাকে। এছাড়া একযোগে ২৪ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে অপসারণ করা হয়েছে।

তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোট আসিয়ানের বেশ কয়েকটি দেশ তাদের সদস্য মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানকে দেশটির ‘অভ্যন্তরীণ’ ব্যাপার বলে বিবেচনা করছে। জোটের পক্ষ থেকে অথবা সদস্য দেশগুলোর পক্ষ থেকে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের সরাসরি কোনো নিন্দাও জানানো হয়নি।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দিশের এই জোটের বর্তমান চেয়ারম্যান ব্রুনেই। অভ্যুত্থানের পর দেওয়া এক বিবৃতিতে দেশটি বলছে, ‘এই জোট আশা করে জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান রেখে সংলাপের মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।’

আসিয়ান চেয়ারম্যানের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আসিয়ান জোটের সদস্য দেশগুলোতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এই এলাকার শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

তবে আসিয়ানের সদস্য কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড খোলাখুলিই বলেছে, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা তাদের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে তাদের কিছু বলার নেই।

কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন বলেছেন, ‘অভ্যুত্থান মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’

একই মন্তব্য করেছেন থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রীও। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতার্তের একজন মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং এনিয়ে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তবে আমরা আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।’

অন্যদিকে মিয়ানমারে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ সমাধানে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ একসঙ্গে বসে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করবে বলে আশা প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়া। তবে নিন্দা না করলেও অভ্যুত্থানের ঘটনায় অপেক্ষাকৃত শক্ত ভাষায় উদ্বেগ জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুর।

ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, আইনের শাসন, সুশাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সাংবিধানিক সরকার আসিয়ান জোটের চার্টারের মূলমন্ত্র।

এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সিঙ্গাপুর আশা করে সব পক্ষ যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং একসঙ্গে বসে আপোষ মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধের শান্তিপূর্ণ একটি সমাধানের চেষ্টা করে।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা

টিএম