কলারওয়ালি, ছবি: আউটলুক ইন্ডিয়া

মারা গেল ‘কলারওয়ালি’। শনিবার সন্ধ্যায় বার্ধক্যজনিত কারণে ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্রের কিংবদন্তি এই বাঘিনী মারা যায়। ভারতের সংবাদমাধ্যম আউটলুক ইন্ডিয়া ও পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আনন্দবাজার তাদের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বনবিদদের একটি দল গত এক সপ্তাহ ধরে তার স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখছিল। চলতি বছর ১৪ জানুয়ারি পেঞ্চ ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের পর্যটকরা কলারওয়ালিকে দেখতে পেয়েছিল শেষবারের মতো।

এক বিজ্ঞপ্তিতে পেঞ্চ বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা ১৫ মিনিট নাগাদ জঙ্গলের কর্মঝিরি রেঞ্জে কলারওয়ালি মারা যায়।

১৭ বছর বয়সে মারা যাওয়া এই বাঘিনী তার জীবদ্দশায় ২০০৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ২৯ টি শাবকের জন্ম দিয়েছিল। আর সেই কারণেই সে ‘সুপার মম’ তকমাও অর্জন করেছিল কলারওয়ালি। ‘টি-১৫’ নামেও পরিচিত ছিল সে।

তার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন স্থানীয়রাও। তারা কেউ মালা দিয়ে, আবার কেউ হাত জোড় করে কলারওয়ালির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানও তাকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে একটি টুইট বার্তায় জানান, ‘মধ্যপ্রদেশের গর্ব এবং ২৯ টি শাবকের মা কলারওয়ালিকে শ্রদ্ধা জানাই। মধ্যপ্রদেশকে বাঘ রাজ্যের মর্যাদা অর্জনে সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পেঞ্চ বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্র সর্বদাই তার শাবকদের গর্জনে মুখরিত থাকবে।’

বিশ্বের অতি বিপন্ন প্রানীর তালিকায় থাকা অন্যতম প্রাণী বাঘ। ভারতে মোট বাঘের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার। এসব বাঘের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চলে।

ভারতের কেন্দ্রীয় বনবিভাগের কর্মকর্তা পারভিন কাসওয়ান টুইট করে জানান, ‘কলারওয়ালিকে পেঞ্চের মা হিসাবে ডাকা হয়। ভারতে বাঘের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলতে তার অবদান গুরুত্বপূর্ণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

ভারতের বাঘ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ,ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি (এনটিসিএ) নির্দেশিকা অনুসারে, কলারওয়ালির মৃতদেহটি সৎকার করা হয়েছে এবং তার শরীরের কিছু অংশ পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে।

২০০৮ সালের মার্চ মাসে এই বাঘিনীকে একটি ট্রান্সমিটার যুক্ত গলাবন্ধনী (রেডিও-কলার) দেওয়া হয়েছিল। তার পরই তার নাম দেওয়া হয় কলারওয়ালি। আগের রেডিও-কলারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পরে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে তাকে আবার নতুন একটি রেডিও-কলার দেওয়া হয়।

সূত্র: আনন্দবাজার, আউটলুক ইন্ডিয়া

এসএমডব্লিউ