টিকায় আস্থা বেড়েছে বিশ্ববাসীর
গত নভেম্বরের এক জরিপে যে চিত্র দেখা গিয়েছিল চলতি বছরে নতুন করে ওই একই জরিপে দেখা যাচ্ছে, করোনার টিকার প্রতি আস্থা বেড়েছে বিশ্ববাসীর। আগে যেসব মানুষ টিকা নেওয়ার ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন তারাও এখন টিকা নিতে চাচ্ছেন। স্বেচ্ছায় টিকা নেওয়ার আগ্রহ বাড়ায় মহামারি অবসানের আশা তৈরি হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
জরিপে দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ মানুষ করোনার টিকায় আস্থা রাখছেন। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই টিকা নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে কিংবা মাঝারি ধরনের আস্থাবাদী। অপরদিকে ১২ শতাংশ বলছেন, করোনার টিকায় কোন আস্থা নেই তাদের। দুই-তৃতীয়াংশ মনে করে টিকা নেওয়া তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
বিজ্ঞাপন
৭৮ শতাংশ নিয়ে ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী। ৬৭ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডেনমার্ক।
পূর্বের মতো এবারও ১৫টি দেশের ১৩ হাজার ৫০০ মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে করা ওই জরিপে অবশ্য একেক দেশের চিত্র একেক রকম দেখা যাচ্ছে। টিকার ব্যাপারে সবচেয়ে সন্দেহবাতিক ফরাসিরা এবং এশিয়ার বেশ কিছু দেশে টিকার প্রতি আস্থা কমেছে। অপরদিকে ইউরোপের কিছু দেশে টিকায় আস্থার বাড়তে দেখা গেছে এবার।
বিজ্ঞাপন
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউগভ এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের ইনস্টিটিউট অব গ্লোবাল হেলথ ইনোভেশনের (আইজিএইচআই) করা ওই জরিপ প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। তাতে দেখা যাচ্ছে, ৭৮ শতাংশ নিয়ে ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী। ৬৭ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডেনমার্ক।
গত নভেম্বরের গড়ে টিকা নিতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪০ শতাংশ। জানুয়ারিতে তা বেড়ে হয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ।
গত নভেম্বরের চেয়ে টিকার প্রতি আস্থা বেড়েছে বিশ্বজুড়ে। ওই সময় ১৫টি দেশের ১৩ হাজার ৫০০ মানুষের মতামত নিয়ে করা জরিপে দেখা যায়, তখন গড়ে টিকা নিতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪০ শতাংশ।
জরিপে অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ফ্রান্সের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দেশটির ৪৪ শতাংশই বলছেন, তারা করোনার টিকা নেবেন না। তবে দৃঢ়তার সঙ্গে টিকা নিতে আগ্রহ জানানো মানুষের সংখ্যা গত জরিপের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে সেখানে। গত নভেম্বরে এমন মানুষের সংখ্যা ছিল ১৫ শতাংশ; জানুয়ারিতে তা বেড়ে হয়েছে ৩০ শতাংশ।
জাপানিদের মধ্যে টিকা নিতে অনাগ্রহী মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরপরই রয়েছে উন্নত হিসেবে পরিচিত নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুর।
তবে গত নভেম্বরের চেয়ে জানুয়ারিতে এসে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, এবং সিঙ্গাপুরে টিকা নিতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কমেছে। সবচেয়ে কমেছে জাপানে। এরপরই রয়েছে উন্নত হিসেবে পরিচিত নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুর।
আইজিএইচআই-এর সহকারী পরিচালক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯ বিশেষজ্ঞ ডেভিড নাবারো বলছেন, ‘মহামারির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে টিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অতএব মানুষ যাতে কোভিড-১৯ এর টিকা নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং কেউ যেন টিকা নেওয়া থেকে বাদ না পড়েন এর জন্য বিশ্বনেতাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। টিকা নেওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে সহযোগিতার কাজটি করতে হবে তাদের।’
মহামারিকালে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত আচরণ ও মনোভাব সম্পর্কে মনিটর করছে এমন কিছু স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দুটি প্রতিষ্ঠান টিকা নিয়ে এমন জরিপ পরিচালনা করছে।
এএস