নতুন ধরনে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে ডব্লিউএইচ’র উদ্বেগ
বিশ্বজুড়ে শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন ধরনগুলোর বিরুদ্ধে বর্তমানে বাজারে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির টিকাগুলো যথেষ্ট কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ফ্রান্সভিত্তিক বার্তাসংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ উদ্বেগ জানিয়েছেন ডব্লিউএইচওর ইউরোপ শাখার প্রধান হ্যান্স ক্লাগ।
সম্প্রতি ওই সাক্ষাৎকারে এএফপির তরফ থেকে হ্যান্স ক্লাগকে প্রশ্ন করা হয়- বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে করোনাভাইরাসের যে নতুন ধরনগুলো শনাক্ত হয়েছে, বর্তমানে বাজারে থাকা টিকাগুলো এই ধরনসমূহের বিরুদ্ধে মানবদেহে কার্যকর প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে পারবে কিনা।
বিজ্ঞাপন
এর উত্তরে ডব্লিউএইচওর এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে আছি আমরা। কারণ নতুন এই ধরনগুলো প্রতিনিয়ত আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে- ভাইরাসটি এখনও আমাদের অর্থাৎ মানুষদের থেকে এগিয়ে রয়েছে।’
ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাসের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়, যার সংক্রমণ ক্ষমতা ভাইরাসের প্রচলিত ধরনটির তুলনায় ৬০ শতাংশেরও বেশি; কাছাকাছি সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হয় ভাইরাসের আর একটি ধরন; সেটির সংক্রমণ ক্ষমতাও প্রচলিত ধরনটির তুলনায় অধিক। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের ৬০ টি নতুন ধরন শনাক্ত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু একই মাসে, অর্থাৎ ডিসেম্বরে বাজারে আসে ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকা। গত ২ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য এই টিকার অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য সরকার। এরপর যে কয়েকটি টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন দেশে ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে সেগুলোর মধ্যে মডার্না, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, স্পুটনিক ৫, সিনোভ্যাক, কোভিশিল্ড প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
ইউরোপ ডব্লিউএইচওর প্রধান জানান, ভাইরাসের শনাক্ত হওয়া নতুন ধরনসমূহের বিরুদ্ধে এই টিকাগুলো যথেষ্ট কার্যকর হবে কি না তা নিয়ে উদ্বেগে থাকলেও আশা ছাড়তে রাজি নন তিনি।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে গেলে, টিকা আসার পর ভেবেছিলাম আমরা এই বৈশ্বিক দুর্যোগের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। তবে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই; আমার বিশ্বাস এ বছরটি শেষ হওয়ার আগেই আমরা এই মহামারি থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।’
তবে গত জানুয়ারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতৃত্বে ইউরোপের ২৭ টি দেশে একযোগে শুরু হওয়া গণটিকাদান কর্মসূচির ঝিমিয়ে পড়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন হ্যান্স ক্লাগ। সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ এখন পর্যন্ত ইইউর মাত্র ২.৫ শতাংশ মানুষকে প্রাথমিকভাবে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। এটা খুবই হতাশাজনক। জনগণকে টিকার আওতায় আনতে ইইউভূক্ত দেশগুলোর সরকারদের আরও তৎপর হওয়া উচিত।’
এসএমডব্লিউ