গত ১১ জানুয়ারি সকালে দুলাল মিয়াকে হেফাজতে নেয় কলাবাগান থানা  

রাজধানীর কলবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া ইফতেখার ফারদিন দিহানের বাসার দারোয়ান দুলাল মিয়াকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ডিএমপি রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা তাকে আটক করিনি, সাক্ষী হিসেবে আদালতে তুলেছিলাম। সাক্ষী দেওয়া শেষে তিনি এখন মুক্ত।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজামান বলেন, আনুশকা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দিহান ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দি দিয়েছে সে প্রেক্ষিতে সাক্ষী হিসেবে দুলাল মিয়াকে হেফাজতে নিয়েছিলাম। তিনি ঘটনার দিন যা দেখেছেন তা আদালতের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গত ৭ জানুয়ারি ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন দিহানের বাসার দারোয়ান দুলাল মিয়া। 

পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১১ জানুয়ারি সকালে তাকে হেফাজতে নেয় কলাবাগান থানা পুলিশ।  

রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১২ জানুয়ারি দুপুরে আদালতে সাক্ষ্য দেন দুলাল মিয়া। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এ জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে ডলফিন রোডে নিজ বাসায় নিয়ে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনকে ধর্ষণ করেন দিহান। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আনুশকা অচেতন হয়ে গেলে তাকে কলাবাগানের আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান দিহান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনুশকাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দিহান ও তার তিন বন্ধুকে আটক করে পুলিশ।

ঘটনার দিন রাতে কালবাগান থানায় দিহানকে আসামি করে মামলা করেন আনুশকার বাবা মো. আল আমিন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ২ ধারায় মামলাটি করা হয়। পরদিন ৮ জানুয়ারি দিহানকে আদালতে তোলা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

ওইদিন বিকেলে আনুশকার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) ফরেসনিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আনুশকার মৃত্যু হয়েছে। তার যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথ দুই দিক দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ময়নাতদন্তে দেহের দুই অংশেই আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে ধস্তাধস্তির কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেতনানাশক কোনো কিছু খাওয়ানো হয়েছিল কি না তা জানার জন্য নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। ঘটনাস্থলে একাধিক ব্যক্তি ছিল। তাদের ডিএনএ নমুনা এবং ভিসেরাও সংগ্রহ করা হয়েছে।

ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় শুক্রবার রাতে দিহানের তিন বন্ধুকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

এমএসি/এসআরএস