বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে ৫টি সংস্থা। সেই সঙ্গে অর্থপাচারের বিষয়ে কানাডা সরকারের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইএইউ)। 

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এসব প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অর্থ পাচারের রিপোর্ট দিলে সঙ্গে সঙ্গে তা আদালতে দাখিল করা হবে।

এক প্রতিবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, মামলার হিসাবে এখন পর্যন্ত আড়াই হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। সিআইডি জানিয়েছে ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ ৭ জন হ্যাকারদের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কায় টাকা পাচার করেছেন। শুধুমাত্র সম্রাট এবং এনামুল হক আরমানই ২৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯১ টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার করেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এর আগে ১৫ ডিসেম্বর কানাডার বেগম পাড়ায় অর্থ পাচারকারীদের তালিকার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরসহ সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গত ২২ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব ধরনের তথ্য চেয়ে আদেশ দেন।

পাচারকারীদের নিয়ে ১৯ এবং ২১ নভেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন- রাজনীতিবিদেরা না, বিদেশে বেশি অর্থ পাচার করেন সরকারি চাকুরীজীবীরা। আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। কিছু আছেন পোশাক শিল্পের ব্যবসায়ী। আমরা আরও তথ্য সংগ্রহ করছি। পাচারে শুধু কানাডা নয়, মালয়েশিয়াতেও একই অবস্থা। তবে তথ্য পাওয়া খুব কঠিন। বিভিন্ন মিডিয়ায় যে তথ্য বের হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, আসলে সংখ্যাটি তত নয়।’

এ বিষয়ে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ রুল জারি করেন। রুলে টাকা পাচারকারী সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেনো অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

চার সপ্তাহের মধ্যে দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইনেন্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, এনবিআর চেয়ারম্যান এবং ঢাকা জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ রুল বিবেচনায় থাকা অবস্থায় বিদেশে টাকা পাচারকারীদের নাম ঠিকানাসহ সব তথ্য (মামলাসহ, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা) প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইনেন্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এমএইচডি/এমএইচএস/এনএফ