ইউল্যাব শিক্ষার্থীর বান্ধবী নেহা ৫ দিনের রিমান্ডে
ইউল্যাব শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নেহা। গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে আজিমপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ
রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ভুক্তভোগী তরুণীর বান্ধবী নেহার পাঁচদিনের রিমান্ড মন্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা ম্যাট্রেপলিটন সত্যব্রত সিকদার শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এদিন দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে নেহাকে আদালতে হাজির করেন। এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবী এ বি এম খায়রুল ইসলাম লিঠন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্টপক্ষ বিরোধিতা করেন। পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আসামির পাঁচদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে আজিমপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নেহা ওই তরুণীর ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্র জানায়, ২৮ জানুয়ারি মদ্যপানের পর থেকে নেহাও অসুস্থ ছিল। তবে গ্রেপ্তারের সময় সে মোটামুটি সুস্থ ও সবল ছিল। সেদিন তারা যে মদপান করেন সেগুলো নেহার ছেলে বন্ধু কিনে এনেছিল। নেহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, পাশাপাশি তার বন্ধুর পরিচয় পাওয়া গেছে। তাকে খুঁজতেও অভিযান চলছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ৩১ ডিসেম্বর একটি পার্টিতে মদপানের পর রহস্যজনক মৃত্যু হয় ইউল্যাব শিক্ষার্থীর। এ ঘটনায় একটি মামলা করেছে নিহত তরুণীর বাবা। মামলার এজাহারে ওই তরুণীকে মদ্যপান করিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার কথা বলা হয়েছে। এতে সহযোগী হিসেবে চারজনের নাম উল্লেখসহ মোট পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হচ্ছেন ওই তরুণীর বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরী (২১)। মামলায় যাকে ধর্ষক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য চার সহযোগীর মধ্যে তিনজন হচ্ছেন- নুহাত আলম তাফসির (২১), আরাফাত (২৮) ও নেহা (২৫)। আরেক বন্ধুর নাম জানা যায়নি। মামলায় অজ্ঞাত হিসেবে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে আরাফাত নামে একজন মারা গেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী (তরুণ) উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।
এজাহারে বলা হয়েছে, মদ্যপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিল। তাদের চোখের সামনেই ধর্ষণ করা হয়।
ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খান কোকোকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ৩১ জানুয়ারি তরুণী মারা যান।