যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে আছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। জাহাজটিতে ২৯ জন বাংলাদেশি  নাবিক রয়েছেন। তারা সবাই ভালো আছেন। জাহাজটি বর্তমানে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দর চ্যানেলে নোঙর করা আছে। বন্দরের কার্যক্রম চালু হওয়ার পর আন্তর্জাতিক জলসীমায় আসতে পারবে। 
 
মঙ্গলবার (১ মার্চ) সকালে ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ক্যাপ্টেন মো. মুজিবুর রহমান। 

তিনি বলেন, বাংলার সমৃদ্ধি বর্তমানে নিরাপদে আছে। বন্দরের কার্যক্রম চালু হলে জাহাজটি বেরিয়ে আসবে। জাহাজে পর্যাপ্ত খাবার মজুদ আছে। 

তিনি আরো বলেন, বন্দর চ্যানেলের আশপাশে মাইন পুতে রেখেছে বলে জানতে পেরেছি। এটি একটি বড় ইস্যু। বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতি এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের পাইলটের সাহায্য ছাড়া জাহাজ বের হতে পারে না। প্রায় ৬০ মাইলের চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আমাদের জাহাজকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আসতে হবে। তাই বন্দর চালু হওয়ার অপেক্ষায় আছি। 

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ক্যাপ্টেন মো. মুজিবুর রহমান বলেন, অলিভিয়া বন্দরের ল্যান্ড থেকে দুই মাইল দূরে জাহাজটি বর্তমানে বন্দর চ্যানেলে নিরাপদে অবস্থান করছে। জাহাজটির আশপাশে বিভিন্ন দেশের আরো জাহাজ রয়েছে। জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। এখনো এই জলসীমায় কোনো জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি। 

জাহাজের নাবিকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা আছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের নাবিকরা অনেক সাহসী। সাহসী না হলে রিস্কি বা চ্যালেঞ্জিং জবে আসতে পারতেন না।  

আলভিয়া বন্দরে কার্গো লোড করার যে কথা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। জাহাজকে বন্দর ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু বন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্যাপ্টেন বের হতে পারেনি। ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে জাহাজাটি কবে বাংলাদেশে ফিরতের পারবে তা এখন অনিশ্চিত।

বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ। এরপর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। 

কেএম/এইচকে