তিন মাসের বাসা ভাড়া মেটাতে আফরোজাকে হত্যা করেন চালক
রাজধানীর বাড্ডায় আফরোজা সুলতানা হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিবি জানায়, আফরোজার গাড়িচালক হৃদয় বেপারী তাকে হত্যা করেছে। টাকা ও স্বর্ণালংকারের লোভে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটান। মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত চালক মো. হৃদয় বেপারীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান ডিবি-গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আফরোজা গুলশান-২ এর সেভেন সার্কেল বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ছিলেন। গত ১৩ মার্চ বাড্ডার গুদারাঘাটের বাসায় গলা কেটে আফরোজা সুলতানাকে হত্যা করা হয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে সিআইডি, পিবিআই, থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা একত্রিত হয়ে তদন্ত শুরু করে। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগের গুলশান জোনাল টিমও এ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তদন্ত চলাকালীন তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় ডিবি। পরে রাজধানীর মধ্য বাড্ডা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার মো. হৃদয় ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর থেকে তিনি নানা কাজে যুক্ত হন। ২০০৫ সালে ড্রাইভিং শিখে বিভিন্ন জায়গায় ড্রাইভার হিসেবে কাজ করেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে সেভেন সার্কেল বাংলাদেশ লিমিটেডের ড্রাইভার হিসেবে যোগ দেন। সে প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে আফরোজা সুলতানা তাকে নিয়োগ দেন।
মশিউর রহমান বলে, হৃদয় জুয়া খেলতেন। বড় সংসার তার ওপর তিন মাসের বাসা ভাড়া বাকি। চরম অভাবে পড়ে যান তিনি। এক পর্যায়ে চিন্তা করেন বেশ কিছু টাকা হলে দূরে কোথাও গিয়ে অন্য ব্যবসা করে সংসার চালাবেন। হৃদয় ধারণা করেন, আফরোজার কাছে অনেক টাকা ও স্বর্ণালংকার আছে। কারণ গাড়ি দিয়ে আফরোজা সুলতানা বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা জমা দিতেন। এতে তার ধারণা হয় তাকে হত্যা করে বাসা থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিতে পারবেন। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটনা হৃদয়। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধার করেছে ডিবি। তাকে আফরোজা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডের জন্য আদালতে পাঠাবে ডিবি।
এআর/এসকেডি