কোস্ট গার্ডের আধুনিক জাহাজ

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হতে যাচ্ছে। উন্নয়ন, সাহসী অপারেশন ও সেবামূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পদক পাচ্ছেন ৪০ কোস্ট গার্ড সদস্য।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পদক, প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড পদক, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক ও প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড (সেবা) নামে চার ক্যাটাগরিতে এসব পদক দেওয়া হচ্ছে।

১৪ ফেব্রুয়ারি (রোববার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মনোনীতদের হাতে পদক তুলে দেবেন।

একই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন আমন্ত্রিত অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক অতিথিবৃন্দ।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পদক (বিসিজিএম) পাচ্ছেন যারা
এম আশরাফুল হক, এস এম মঈন উদ্দীন, এম সাজ্জাদ হোসেন, ইমতিয়াজ আলম, শাহ জিয়া রহমান, এম মেহেদী হাসান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ আলী, মাহমুদ শরীফ ও এম আবু হানিফ।

প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড পদক (পিসিজিএম) পাচ্ছেন যারা
এস এম শরিফ-উল ইসলাম, মো. নিজাম উদ্দিন সরদার, এম ফিরোজ খাঁন, এম বায়েজীদ, এম আব্দুর রাজ্জাক, রেজাউল করিম, এম সোহরাব হোসেন, এম ইয়াদুল ইসলাম, মো. সুমন মিয়া ও মো. আশিক ইকবাল শাকিল।

কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক (বিসিজিএমএস) পাচ্ছেন যারা
এম শাহজাহান, এম নূরুল ইসলাম শরীফ, এস এম আনোয়ারুল করিম, ফাতেমা তুজ জোহরা, মো. ইয়াকুব আলী, মো. মামুন মিয়া, মো. মোনাঈম হোসেন, মো. সাইফুর রহমান, মামুন-উর-রশিদ ও মো. শাহীনূল হক।

প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক (পিসিজিএমএস) পাচ্ছেন যারা
এম মাহফুজুর রহমান, এম আশরাফুল আলম, এম লোকমান হাকিম, মোস্তফা তারিক হায়দার, মোহাম্মদ সেকিল, এম আব্দুস সালাম মিয়া, এম সাইফুল ইসলাম, ইউছুফ আল মামুন, মো. আতিকুল বারী ও মো. ইয়াকুব মোন্না। 

১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বর্তমানে দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশের সমুদ্রসীমা ও উপকূলীয় অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, জনগণের জানমাল রক্ষা, চোরাচালান-মাদক-মানব পাচার দমনের পাশাপাশি নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও সহায়তা দেওয়ার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা ও আস্থার বিশ্বস্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও, কোস্ট গার্ডের নিরলস প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর ঝুঁকিপূর্ণ বন্দরের তালিকা থেকে বের হয়ে একটি নিরাপদ বন্দরে পরিণত হয়েছে।

২০২০ সালে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড প্রায় ১১৩ কোটি টাকার চোলচালানকৃত পণ্য আটক, এক হাজার ৩৩৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার মৎস্য ও অবৈধ জাল, ৯৯ কোটি পাঁচ লাখ টাকার অবৈধ মাদক ও তিন কোটি ৬৮ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকার কাঠ আটক করেছে। করোনায় লকডাউন ব্যবস্থাপনা ও জননিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অসহায়, দুঃস্থ, কর্মহীন ও শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে কোস্ট গার্ড।

কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার আমিরুল হক জানান, বিভিন্ন আধুনিক জাহাজ, ঘাঁটি ও জলযান সংযোজনের মাধ্যমে বর্তমানে এ বাহিনীর সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোস্ট গার্ডকে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর এ বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে ৯টি জাহাজ এবং একটি ঘাঁটি।

সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে বেশি কার্যকর, শক্তিশালী ও সুদক্ষ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে এ বাহিনীর প্রত্যেক সদস্য উজ্জীবিত ও বদ্ধপরিকর। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।

জেইউ/আরএইচ/ওএফ