প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা মুক্তিযোদ্ধারা তার সরকারের সময় অবহেলায় থাকতে পারেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ১২ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। তবে, আমি মনে করি, এ ১২ হাজার টাকা কিছুই না। একে আমরা ২০ হাজার টাকা করে দেব। তবে এটা করতে একটু সময় লাগবে। কারণ, বাজেটে টাকা বরাদ্দসহ সবকিছুর ব্যবস্থা করতে একটু সময় লাগে। ২০ হাজার টাকা করেই মুক্তিযোদ্ধারা সবাই পাবেন।’

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস)-এর মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ‘জিটুপি’ পদ্ধতিতে সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনের একাউন্টে সম্মানী ভাতা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করার সময় তিনি এ কথা বলেন।

এর ফলে এখন থেকে প্রতিমাসে ১ লাখ ৬৮ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ১২ হাজার করে টাকা সম্মানী ভাতা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানস্থল ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংযুক্ত ছিলেন।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের এখন আর কারো জন্য অপেক্ষা করতে হবে না, কারো কাছে ধর্না দিতে হবে না। এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম)-এর ভিত্তিতে টাকাটা সরাসরি যার প্রাপ্য তার হাতে পৌঁছে যাবে। সরকার থেকে জনগণ অর্থাৎ জিটুপি’র মাধ্যমে সরাসরি টাকা পৌঁছে যাবে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সভার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের কল্যাণ ট্রাস্ট বোর্ডের মিটিং ছিল। সেখানে এতগুলো ভাগ না করে আমরা বলেছি নিচের যে কয়টা স্লট আছে সেগুলো এক জায়গায় করে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ২০ হাজার টাকায় বৃদ্ধি করবো। অর্থাৎ বীরশ্রেষ্ঠ এবং বীর উত্তম ছাড়া বাকি যারা আছেন। আমি মনে করি সবাইকে একসঙ্গে করে দেওয়াটাই ভালো। কারণ, সবাই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষ এবং আসন্ন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সরকারের নেওয়া কর্মসূচির আওতায় দেশের সব গৃহহীনকে ঘরে দেওয়ার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার গৃহ নির্মাণেরও ঘোষণা দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৪ হাজার ১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে গৃহীত এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো গৃহ থাকবে না, তারা কষ্ট করে থাকবেন। এটা আমি যতদিন সরকারে আছি তা অন্তত হতে পারে না।’

অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রায় ৪ হাজার ১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০ হাজার আবাসন ‘বীর নিবাস’ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছে শেখ হাসিনা। সরকার প্রধান বলেন, আশা করছি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ বছরেই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

অনুষ্ঠানের সঙ্গে ঢাকা এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈর, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি, খুলনার পাইকগাছা এবং চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা সংযুক্ত ছিল। প্রধানমন্ত্রী পরে এসব স্থানের উপকারভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।

এমএইচএস