বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছিল: তাপস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
পঁচাত্তর সালের পর ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ডিএসসিসি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে ভাষা আন্দোলনের যে সূত্রপাত, তার অন্যতম পুরোধা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যেভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের পরে মুক্তিযুদ্ধের সকল ইতিহাস থেকে জাতির পিতাকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছে, তেমনি পঁচাত্তরের পরে ভাষা আন্দোলনসহ তার পূর্বের অবদানগুলোও মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। যে ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল সূচনা, বিভিন্ন সময় সেটাও মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলা রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে উল্লেখ করে তাপস বলেন, ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলন শুরু, ১৯৫২ সালে রক্ত দেওয়া। এটা আমরা অর্জন করতে পেরেছিলাম ৫৬ সালে। তাও পাকিস্তানের একটি ভাষা হিসেবে। উর্দু স্টেট ল্যাঙ্গুয়েজ, তার সঙ্গে বাংলা দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলো। যদিও আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলাম।
এদিকে বরেণ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে করপোরেশনের সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, এখন থেকে ডিএসসিসির আওতাধীন এলাকার বরেণ্য, পদকপ্রাপ্ত ও স্বনামধন্য ব্যক্তিদেরকে কিভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কার্যক্রম এবং সম্মাননা প্রদর্শনে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা যায়, সে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
বিজ্ঞাপন
ভাষার সঠিক ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরে ব্যারিস্টার তাপস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহারের জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়ে চলেছেন। আজকে মুঠোফোনে আমরা যে বাংলা বার্তা আমরা পাই, তা শেখ হাসিনার নির্দেশেই হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা করপোরেশনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে আমরা একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার সব সরকারি-বেসরকারি-আধাসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নামফলক-চিহ্নফলক অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে। কোনো ইংরেজি শব্দও বাংলা বর্ণ দিয়ে লেখা যাবে না।
অপসংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে বাংলা ভাষা রক্ষার্থে এ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে আমরা দেখছি, অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে বাংলাভাষা তার মর্যাদা এবং সম্মান হারিয়ে ফেলেছে। এজন্য আমরা মনে করি, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকার সব নামফলক এবং চিহ্নফলক বাংলায় হওয়া আবশ্যক।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট অভিনয় শিল্পী সালমা বেগম সুজাতা বলেন, বায়ান্ন সালে যে সকল শহীদের রক্ত এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষা অর্জিত হয়েছে, সে ত্যাগের ফসল আমাদের এ একুশে পদক। এটা মহান প্রাপ্তি, বিশেষ প্রাপ্তি। এটা স্বর্গীয় সুখ।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে এবং সচিব আকরামুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মেয়র প্যানেলের ১নং সদস্য ও ৪৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শহিদ উল্লাহ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে খ্যাতিমান অভিনেতা, প্রয়াত এটিএম শামসুজ্জামান, ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা সভার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
এএসএস/এমএইচএস