ভিয়েতনামে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত করা হয়। এছাড়া শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। পরে দোয়া ও মোনাজাত, আলোচনা অনুষ্ঠান এবং ডকুমেন্টারি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

ভিয়েতনামে করোনা মহামারির কারণে দেশটির সরকারের সতর্কতা ও জন সমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় সামাজিক দূরত্ব মেনে দিবসটিতে স্বল্প সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি, দূতাবাসের বাংলাদেশি ও ভিয়েতনামের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন ও অর্ধনমিত করার মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রদূত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন। রাষ্ট্রদূত গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার কালজয়ী নেতৃত্বে ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ভাষা, সংস্কৃতি ও স্বকীয়তার ভিত্তিতে বাংলাদেশ অর্জন করে স্বাধীনতা।

বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত ভাষা শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও ভাষা সৈনিকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বক্তব্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষার দাবিতে গঠিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বদান ও এ কারণে তার কারাবরণের কথা বিনম্র চিত্তে স্মরণ করেন।

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভের ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত বক্তব্যে মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অফিস-আদালত, কোট-কাচারীসহ সকল ক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে সব বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকের প্রতি আহবান জানান।

একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ভাষা শহীদদের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে আমন্ত্রিত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও দেশি খাবারে আপ্যায়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

এনআই/এসএসএইচ