কমলাপুর রেলস্টেশন কাউন্টারের বুকিং সহকারীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের একজন সংবাদকর্মী। ভুক্তভোগী ওই সংবাদকর্মীর নাম রাসেল শেখ। তিনি যমুনা টেলিভিশনের নিউজরুম এডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সকালের দিক এ ঘটনা ঘটে।

শেখ রাসেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, কাউন্টারের সামনে টিকিট প্রত্যাশীদের লম্বা লাইন। কিন্তু টিকিট না দিয়ে অন্য কাউন্টারে গিয়ে খোশগল্প আর ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত ছিল বুকিং সহকারীরা। এ ঘটনা শুধু আজকের না, নিত্যদিনের। আর এ বিষয়ে প্রতিবাদ করে ঘটনাটির ভিডিও করতে যাওয়ায় বুকিং সহকারী ও রেলকর্মীদের মারধরের শিকার হতে হয়েছে।

তিনি বলেন, বাবা চারদিন ধরে অসুস্থ। তাই জরুরি ভিত্তিতে ময়মনসিংহ যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট কাটতে কমলাপুরে আসি। রানিং গাড়ির টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ানোর পর দেখি, দীর্ঘক্ষণ কেউ টিকিট পাচ্ছেন না। এগিয়ে গিয়ে দেখি কাউন্টারে কেউ নেই। যিনি থাকার কথা, সে অন্য কাউন্টারের সামনে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছেন। আরও বেশকিছু সময় অপেক্ষা করার পরও দেখি ওই নারী বুকিং সহকারীর কথা বলা শেষ হয় না। প্রাথমিকভাবে জানতে পারি ওই নারী বুকিং সহকারীর নাম জেনি।

রাসেল বলেন, পরে ওই বুকিং সহকারীকে ডেকে কারণ জানতে চেয়ে নিজের মোবাইলের ক্যামেরায় রেকর্ড করার চেষ্টা করি। এটা দেখেই ওই নারী চিৎকার শুরু করেন। আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে দুই-তিনজন আনসার ও আরএনবি সদস্য পাঠিয়ে কাউন্টারের ভেতরের অ্যাকাউন্টস রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আমি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আমার আইডি কার্ড দেখাই। হঠাৎ দাড়িওয়ালা এক বুকিং সহকারী এসে আমাকে পেটে, পিঠে ও মাথায় চড় মারেন। ফোন ও আইডি কার্ড নিয়ে যায়। তখন আমি কমলাপুরে ঈদযাত্রা কভার করতে আসা আমার সহকর্মী সিনিয়র রিপোর্টার শাকিল হাসানকে ঘটনাটি জানাই। শাকিল হাসান ঘটনাস্থলে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ারকে নিয়ে হাজির হন। 

তিনি বলেন, স্টেশন ম্যানেজার আসলে তার সামনে আমাকে লাঞ্ছিত ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো দোষারোপ করতে থাকে। দুই পক্ষের কাছে ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার। অভিযুক্ত কাউন্টার কর্মীদের প্রত্যাহার ও বদলির সুপারিশ করা হবে বলে আশ্বাস দেন। স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার। ঘটনার পর থেকে কাউন্টার এলাকা থেকে পালিয়ে যান মারধর করা কাউন্টারম্যান। আর টিকিট না দিয়ে ফোনে কথা বলা নারীকর্মীর নাম জেনি। সে নিজেকে সময় টিভির প্রযোজক আফজালুল টিপুর বোন বলে পরিচয় দেন। কোনো সাংবাদিক তার কিছু করতে পারবে না বলেও হুমকি দেন রেলকর্মী জেনি।

এ বিষয়ে জানতে স্টেশন ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ারকে মুঠোফোনে কল করলেও পাওয়া যায়নি। 

এমএইচএন/আইএসএইচ