আমাদের এখানে বড় একটা অন্যায় গেড়ে বসে আছে: পরিকলল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান/ ফাইল ছবি
আমাদের এখানে বড় একটা অন্যায় গেড়ে বসে আছে, ফলে দেশে দরিদ্রতা বাড়ছে। এই অন্যায় দূর করে দারিদ্র্যের হার আরও কমাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী অন্যায়গুলো সরিয়ে দারিদ্র বিমোচন করছেন বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ‘মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০২০’ প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনামন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, ইউএনডিপির প্রতিবেদন প্রতি বছর আমাদের দেশের জন্য দারুণ ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রীর অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। গত ১২ বছরে তার কৌশলে দেশ সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সব কৌশল ঠিক ছিল। তবে ২০২০ সাল নিয়ে চিন্তিত ছিলাম, সারা বিশ্বের মানুষ দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, নিজের মায়ের রক্ত খেয়ে যেমন বাচ্চা বাড়ে, ঠিক তেমনই প্রকৃতিকে খেয়েও আমরা মানবজাতি বেড়েছি। সুতরাং আমাদের মধ্যে সচেতনতা এসেছে যে, মায়ের পাশাপাশি প্রকৃতিকেও রক্ষা করতে হবে। সেদিকেও আমাদের নজর ঘুরাচ্ছি।
মানব উন্নয়ন সূচকের মাধ্যমে মূলত একটি দেশের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জীবনযাত্রার সামগ্রিক অবস্থা পরিমাপ করা হয়, তবে এবার মানব উন্নয়ন সমীক্ষা প্রবর্তনের ৩০তম বার্ষিকীতে দুটি বিষয় নতুনভাবে যুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হলো- কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা ও মোট ব্যবহৃত সম্পদের পরিমাণ।
বিজ্ঞাপন
এই সমন্বিত পদ্ধতি থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, মানুষ ও পরিবেশ উভয়ের কল্যাণের ওপর ভিত্তি করে মানব উন্নয়নকে চিন্তা করলে সমগ্র বিশ্বের উন্নয়নের চিত্র সম্পূর্ণ বদলে যায়। যেমন- এ বছর ৫০টিরও বেশি দেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর অধিক নির্ভরশীলতা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাপক ব্যবহারের কারণে র্যাঙ্কিংয়ের প্রথমদিকে থাকতে পারেনি।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমীক্ষাটি প্রকাশের সময় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির প্রধান আকিম স্টেইনার বলেন, পৃথিবীর প্রতিটি দেশই পরিবেশকে ধ্বংস করে মানব উন্নয়নে সমৃদ্ধি লাভ করেছে। তবে প্রথম প্রজন্ম হিসেবে আমরা এই ভুল সংশোধনে এগিয়ে আসতে পারি। এটিই হওয়া উচিৎ মানব উন্নয়নের পরবর্তী পদক্ষেপ।
ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদিপ্ত মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ অতিমারিতে এখনও পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করলেও প্রাণহানির পাশাপাশি অতিমারিজনিত সামগ্রিক প্রভাব আরও অনেক বিস্তৃত ও প্রকট। বহু পরিবার জীবিকা হারিয়ে দারিদ্র সীমার নিচে নেমে গেছে, আয় অসমতা বেড়েছে এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বেড়েছে, লেখাপড়া থেকে দীর্ঘ বিরতির কারণে ছাত্রছাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর মানুষের বিরূপ আচরণকে আমলে নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরেই এরকম একটি অতিমারির আশঙ্কা করছিলেন। এই সমীক্ষাটি আমাদেরকে দেখিয়েছে যে, পরিবেশসম্মত উপায়ে উন্নয়ন পরিচালনা করা অর্থ মানুষ বা প্রকৃতির মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়া নয় বরং একটি সমন্বিত কৌশল অবলম্বন করা।
এফআর