জনপ্রত্যাশা পূরণে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে : নবীনদের আইজিপি
পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের নবীন কর্মকর্তাদের ব্রিফিং অনুষ্ঠানে কথা বলেন আইজিপি
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে চাই পেশাগত জ্ঞান, দেশপ্রেম ও সাহসিকতা। নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য নিজেকে সবসময় প্রস্তুত রাখতে হবে। নিজের মধ্যে দৃঢ় প্রত্যয় সৃষ্টি করতে হবে।
আজ (মঙ্গলবার) পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের নবীন কর্মকর্তাদের ব্রিফিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন আইজিপি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের অন্যতম প্রধান শর্ত আইন-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল থাকা। পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে দেশে শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে, সামাজিক সূচকেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালে আমাদের দেশ উন্নত দেশ হবে। বাংলাদেশ পুলিশকেও উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হতে হবে। আজকের নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদেরই ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল পুলিশ। আত্মতুষ্টি নয়, আমরা অনেক পথ এসেছি, যেতে হবে বহুদূর। আইজিপি বলেন, পুলিশের কাছে জনগণের প্রত্যাশা বেশি, সমাজের চাহিদা বেশি। জনগণ, সমাজ, মিডিয়া প্রতিনিয়ত পুলিশকে ওয়াচ (পর্যবেক্ষণ) করে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
পুলিশ প্রধান বলেন, করোনা মোকাবিলায় প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো ধরনের সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা না করেই পুলিশ সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমরা জনগণের অফুরন্ত ভালোবাসা পেয়েছি। জনগণকে ভালবাসলে তাদের ভালোবাসাও পাওয়া যায়।
বিজ্ঞাপন
জঙ্গিবাদ দমনে সফলতার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ পুলিশ বিশ্বে ‘রোল মডেল’। দেশে জঙ্গিবাদ দমনে আমরা জনগণের আকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছি। যার ফলে জঙ্গিবাদ দমনে আমরা সফল হয়েছি। আইজিপি বলেন, আমরা জনগণের সাথে অসদাচরণ করা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। পেশিশক্তি নয়, ব্যবহার করতে হবে আইনি সক্ষমতা।
দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে আইজিপি বলেন, পুলিশ বাহিনীতে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, পুলিশ বাহিনীতে এসে কারো অবৈধ উপায়ে অবৈধ অর্থ আয়ের ইচ্ছা থাকলে তারা চাকরি ছেড়ে চলে যান। তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণে কাজ করার অপার সুযোগ রয়েছে পুলিশের। পুলিশ হতে পারে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা, সোশ্যাল লিডার।
প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আইজিপি বলেন, একজন দক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা হতে হলে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। গুরুত্বের সাথে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি নিজেকে শারীরিকভাবে ফিট রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিরাসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ পুলিশের ওপর একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচে ৯৭ জন কর্মকর্তা যোগদান করেছেন। তাদের মধ্যে ৮৫ জন পুরুষ এবং ১২ জন নারী কর্মকর্তা রয়েছেন।
জেইউ/এনএফ