শহীদ মিনারে সর্বজনের শ্রদ্ধায় সিক্ত সৈয়দ আবুল মকসুদ

সর্বজনের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হলেন খ্যাতিমান কলামিস্ট, গবেষক, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়।

শহীদ মিনারে আবুল মকসুদের মরদেহ ১ ঘণ্টা রাখা হয়। পরে মরদেহ বাদ আসর তৃতীয় জানাজার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়।

শহীদ মিনারে আবুল মকসুদের মরদেহে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খান, আওয়ামী লীগ নেতা অসীম কুমার উকিল।

এরপর একে একে দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক সমকাল, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আদিবাসী ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আবুল মকসুদের মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রখ্যাত লেখক, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। তিনি বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে স্বাধীনতার চেতনা বিকাশে অনেক অবদান রেখেছেন।

বাদ আসর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এর আগে বাংলাদেশের খ্যাতিমান কলামিস্ট, গবেষক, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ২টা ১৯ মিনিটে তার মরদেহ প্রেসক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে আনা হয়। পরে সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে ২টা ৪৫ মিনিটে আবুল মকসুদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের ইমাম মাওলানা মনিরুজ্জামান।

বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আবুল মকসুদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় স্কয়ার হাসপাতালে মারা যান সৈয়দ আবুল মকসুদ। তার প্রথম নামাজে জানাজা ওইদিন রাত ১০টায় ধানমন্ডির মসজিদে তাকওয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরদেহ রাতে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে রাখা হয়। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সমাজের বিশিষ্টজনরাও তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।

শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যু আমাদের সাহিত্য অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। দেশের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তার অবদান মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। রাষ্ট্রপতি সৈয়দ আবুল মকসুদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অপর এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

সৈয়দ আবুল মকসুদের জন্ম ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর। তিনি তার গবেষণাধর্মী প্রবন্ধের জন্য সুপরিচিত। তার প্রবন্ধগুলো দেশের রাজনীতি, সমাজ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেয়। তিনি বিখ্যাত সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদদের জীবনী ও কর্ম নিয়ে গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখেছেন। পাশাপাশি কাব্যচর্চাও করেছেন। তার রচিত বইয়ের সংখ্যা চল্লিশের ওপর। জার্নাল অব জার্মানি তার লেখা ভ্রমণকাহিনী। বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

এমএইচএন/এমএইচএস