ইব্রাহিম খালেদ ছিলেন আর্থিক খাতের রোল মডেল
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ
>>ইব্রাহিম খালেদ ছিলেন বিবেকের প্রতিনিধি : নূর
>>আর্থিক খাতের রোল মডেল ছিলেন ইব্রাহিম খালেদ : বিএএসএম ডিজি
বিজ্ঞাপন
>>ইব্রাহিম খালেদ ছিলেন স্পষ্টভাষী ও নির্ভীক দেশপ্রেমিক : আলপনা চৌধুরী
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ছিলেন সৎ ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি। তার মধ্যে কোনো অহংকার ছিল না। তিনি শিশুদের বেশি পছন্দ করতেন। সে লক্ষ্যে গড়ে তুলেছিলেন সেগুনবাগিচার কচি-কাঁচা মেলা। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কচি-কাঁচা মেলার মাঠে প্রথম নামাজে জানাজার আগে ইব্রাহিম খালেদের ব্যক্তি ও কর্মজীবন নিয়ে এসব কথা বলেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিজ্ঞাপন
প্রতিক্রিয়ায় সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ইব্রাহিম খালেদ কচি-কাঁচার মেলাকে ভীষণ ভালোবাসতেন। নতুন প্রজন্মকে সুষ্ঠু-সুন্দর এবং নান্দনিক পরিবেশে গড়ে তুলতে কাজ করছিলেন তিনি। তিনি চলে যাওয়ায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধরে রেখেছিলেন তিনি। সরকারি কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় ইব্রাহিম খালেদ নিজের অফিস থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নামাননি, নামাতেও দেননি। ইব্রাহিম খালেদ ছিলেন ব্যাংক ও অর্থনীতি নিয়ে গভীর ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং বিশ্লেষণধর্মী বক্তা। ব্যাংক ও অর্থনীতিতে অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন। সবদিক বিবেচনায় বাংলাদেশ এমন একজনকে হারাল, যিনি আমাদের সমাজে বিবেকের একজন প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন।
কচি-কাঁচা মেলার সাধারণ সম্পাদক আলপনা চৌধুরী প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ইব্রাহিম খালেদ ভাই ছিলেন স্পষ্টভাষী ও নির্ভীক দেশপ্রেমিক। আমার জীবনে এমন মানুষ দেখিনি। শিশুদের তিনি ভালবাসতেন, আমরা দাদা ভাই বলে ডাকতাম। বাইরে থেকে তাকে গম্ভীর দেখা গেলেও বাচ্চাদের সঙ্গে বাচ্চাদের মতই আচরণ করতেন। তার অভাব কোনোদিন পূরণ হবে না।
বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটের (বিএএসএম) মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ আর্থিক খাতের রোল মডেল। তিনি আমাদের কাছে রোল মডেল হিসেবেই থাকবেন। তার এই শূন্যতা পূরণ হবে না। তিনি ছিলেন আর্থিক খাতের বিবেক। তিনি আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছেন, আশা করছি নতুন প্রজন্ম আর্থিক খাতে তা অনুসরণ করবে চলবে।
ইব্রাহিম খালেদের ছেলে খোন্দকার সাঈদ আহমেদ তার বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের প্রথম নামাজে জানাজা দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে এটি অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইব্রাহিম খালেদের ছেলে খোন্দকার সাঈদসহ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও গুণগ্রাহীরা অংশ নেন। এসময় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও ব্যাংকাররাও উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় জানাজার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাকে গোপালগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে মারা যান ইব্রাহিম খালেদ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। ইব্রাহিম খালেদের মৃত্যুর খবরটি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য জানিয়েছিলেন, শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন তিনি। রোববার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ইব্রাহিম খালেদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সমাজের বিশিষ্টজনরাও শোক প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা-সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।
এমআই/আরএইচ