পঞ্চম ধাপের পৌরসভা ভোট উৎসবমুখর হবে: ইসি সচিব
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার
পঞ্চম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রোববারের (২৮ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং উৎসবমুখর পরিবেশে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিজ্ঞাপন
রোববার ২৯টি পৌরসভায় সাধারণ ও ৪টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ।
নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে সচিব বলেন, ‘যেখানেই সমস্যা হচ্ছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেসব বিষয়গুলো আমরা জানতে পারছি, সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনে সহিংসতায় মারা যাওয়া খুবই দুঃখজনক। তবে আমরা আশা করছি আগামী দিনে এরকম ঘটনা আর ঘটবে না।’
বিজ্ঞাপন
এ ধাপের নির্বাচনে বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন আমাদের নীতিমালা অনুযায়ী কোথায় কতজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে, কীভাবে হবে এটির একটি গাইডলাইন আছে। সে অনুযায়ী আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি। সে অনুযায়ী ওনারা নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা আশা করছি আগামী নির্বাচন ভালো হবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি সব জায়গায় নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কিছুক্ষণ আগেও রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন পরিস্থিতি ভালো। যেহেতু আমরা এবার সব পৌরসভায় ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করছি, সুতরাং ব্যালট পেপার ছেঁড়াছিঁড়ির কোনো বিষয় নেই। এবার ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হবে। যার ভোট শুধু তিনি ভোট দিতে পারবেন।’
ঝিনাইদহের শৈলকুপা, ফরিদপুরের মধুখালী, রাজশাহীর পবা ও কুমিল্লার দেবিদ্বারে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন হবে। এছাড়া এর আগে অনুষ্ঠিত সাতটি পৌরসভায় বন্ধ ঘোষিত ভোটকেন্দ্রগুলোতে এবং মৃত্যুজনিত কারণে চট্টগ্রাম সিটির ৩১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে, ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ও সিরাজগঞ্জ পৌরসভর ৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদেও ভোট হবে এদিন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটির ওই ওয়ার্ড ও শৈলকুপায় ভোট হবে ইভিএমে।
এ উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বাড়তি সদস্য মাঠে নেমেছেন। আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। নির্বাচনী এলাকায় যান চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে প্রচারণা।
ইসি জানায়, ১৯ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে নির্বাচনের জন্য ৩১ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরে অন্য ধাপ থেকে পঞ্চমে যুক্ত হয় সৈয়দপুর পৌরসভা। অপরদিকে উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে যশোর পৌরসভার ভোট স্থগিত করা হয়। ভোটগ্রহণের আগ মুহূর্তে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে ইসি। চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলরসহ সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পান।
যে ২৯ পৌরসভায় ভোট
যশোরের কেশবপুর; ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর; চট্টগ্রামের মিরসরাই, বারইয়ারহাট ও রাঙ্গুনিয়া; কিশোরগঞ্জের ভৈরব; জামালপুরের সদর, মাদারগঞ্জ ও ইসলামপুর; ময়মনসিংহের নান্দাইল; মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, গাজীপুরের কালীগঞ্জ; রংপুরের হারাগাছ; রাজশাহীর দুর্গাপুর ও চারঘাট; চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল; বগুড়া সদর; জয়পুরহাট সদর; মাদারীপুর সদর ও শিবচর; ভোলার সদর ও চরফ্যাশন; হবিগঞ্জ সদর; চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও মতলব; ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর; লক্ষ্মীপুরের রায়পুর এবং রংপুরের সৈয়দপুর পৌরসভা।
এসব পৌরসভায় ২৯১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১ হাজার ২৭০ জন, ৯৭টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৪২ জন এবং ২৯টি মেয়র পদে ১০০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৬২৫টি ভোটকেন্দ্রের ৪ হাজার ২২৯ ভোটকক্ষে ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরষ ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৯০ এবং মহিলা ভোটার ৭ লাখ ১১ হাজার ৮৫০ জন।
এসআর/জেডএস