তিন পার্বত্য জেলায় (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) শান্তি ফিরিয়ে আনতে আধুনিক পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত এক সভা শেষে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা অনেকদিন পর আপনার (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হলো? জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় মাঝে মধ্যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেই চলেছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে এ জায়গাটায় লক্ষ্য রাখতে। একজন অতিরিক্ত সচিবের মাধ্যমে তিনটি জেলায় কোথায় কী হচ্ছে তার একটি প্রতিবেদন করা হয়েছে। সেখানে কিছু সুপারিশও ছিল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যত স্টেকহোল্ডার ছিল তাদের সবার সঙ্গে আলাপ করেছি। একই সঙ্গে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে যারা রয়েছে সবার সঙ্গে আমরা বসেছি। উপজেলা চেযারম্যান থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রী সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। এরপর আমরা সর্বশেষ যে সিদ্ধান্তে এসেছি, সেখানে একটি শান্তি চুক্তি হয়েছিল। সে চুক্তি অনুযায়ী কিছু কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়েছে। কিছু কিছু বাস্তবায়ন হয়নি। সে বিষয়ে সন্তু লারমা আমাদের বলেছেন, তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। 

আমরা যে জিনিসটা চাচ্ছি, পার্বত্য জেলার শান্তি চুক্তি রক্ষার্থে সেনাবাহিনী যে ক্যাম্পস্থাপন করেছিল সেগুলো তারা ছেড়ে আসছে। ক্যাম্প ছেড়ে এলেও আমাদের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। সেজন্যই সে ক্যাম্পে আর্মির বদলে পুলিশ মোতায়েন করার জন্য একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে বিষয় সন্তু লারমাকে আমরা জানিয়েছি। আমরা এ বিষয় নিয়ে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বহু মিটিং করেছি

আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

তিনি বলেন, আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় অন্য যে কয়টি জেলা যেভাবে চলছে পার্বত্য চট্টগ্রামের এই তিনটি জেলা যেন একই পদ্ধতিতে চলে। শুধু শান্তি-শৃঙ্খলা নয়, উন্নয়নসহ সব কিছু। এজন্যই সন্তু লারমাকে আমি বিশেষভাবে দাওয়াত দিয়েছিলাম, তিনি আসছিলেন। তার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। তিনিও অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, সেগুলো নিয়ে আমরা আবার বসবো।

আগে অস্থায়ী আর্মি ক্যাম্পে এখন পুলিশ ক্যাম্প হবে, বিষয়টা কী এরকম? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমার মূল লক্ষ্য হলো পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা। আর্মি ক্যাম্পগুলোতে পুলিশ যাবে বিষয়টা ঠিক সেরকম নয়। যেখানে প্রয়োজন পুলিশ সেখানে যাবে। আমরা এ তিন জেলায় আধুনিক পুলিশ মোতায়েন করবো, যাতে সেখানে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে।

পাহাড়ে চাঁদাবাজি বেড়ে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়ে আমরা সন্তু লারমার সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেখানে বলেছি পাহাড়ে খুন-খারাপি শুধু নয় চাঁদাবাজিও হচ্ছে। অস্ত্রপাতির ঝনঝনানি আমরা শুনছি, সব বিষয়ে সহযোগিতার ঐক্যমত প্রকাশ করেছেন তিনি।

এসএইচআর/এসএম