বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে ‘চোখ ওঠা’ রোগ। কনজাংকটিভাইটিস বা চোখের প্রদাহজনিত ছোঁয়াচে এ রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছে সব বয়সী মানুষ। তবে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে রোগটি ছড়াচ্ছে বেশি। লক্ষণ হিসেবে রোগীদের মধ্যে চোখ লাল হওয়া, ব্যথা, ফুলে যাওয়া ও পানি আসার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যা পাঁচ থেকে সাত দিন স্থায়ী হচ্ছে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফুর রহমান। চোখ ওঠার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, চারদিন আগে হঠাৎ করেই শরীর ব্যথা, হাল্কা জ্বর দেখা দেয়। সেই সঙ্গে চোখ জ্বালাপোড়া, চুলকানি আর চোখ থেকে পানি পড়া শুরু হয়। প্রথমদিন বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও পরদিন সকালে দেখি চোখ খুলতে পারছি না। চোখের কোনায় অনেক বেশি ময়লা জমেছে। চোখের জ্বালাপোড়ার পাশাপাশি ব্যথাও অনুভব করছিলাম। আয়নার সামনে গিয়ে দেখি চোখ একদম লাল হয়ে গেছে এবং কিছুটা ফুলেও গেছে।

চোখ ওঠা হলো একটি কনজাংকটিভাইটিস বা চোখের প্রদাহজনিত রোগ। বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে এই রোগটি ছড়াতে দেখা যায়। এটি খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে এবছর হঠাৎ করেই রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, বর্তমানে চোখ ওঠা রোগটি করোনা সংক্রমণের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা শ্বাসনালীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে করোনার নতুন ঢেউয়ের সৃষ্টি করেছে। এমনকি এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের অংশ থেকে নমুনা নিয়ে পিসিআরে পরীক্ষা করলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্পৃক্ততা উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

তিনি বলেন, আমার চোখ ওঠার দুই দিন পরই ছোট ভাইয়েরও দেখি একই অবস্থা। আমার অবস্থা এখন কিছুটা ভালোর দিকে হলেও ছোট ভাইয়ের সমস্যাটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। জানি না পরিবারের বাকি সদস্যদেরও চোখ ওঠার সমস্যায় পড়তে হয় কি না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোখ ওঠা হলো একটি কনজাংকটিভাইটিস বা চোখের প্রদাহজনিত রোগ। বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে এই রোগটি ছড়াতে দেখা যায়। এটি খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে এবছর হঠাৎ করেই রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, বর্তমানে চোখ ওঠা রোগটি করোনা সংক্রমণের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা শ্বাসনালীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে করোনার নতুন ঢেউয়ের সৃষ্টি করেছে। এমনকি এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের অংশ থেকে নমুনা নিয়ে পিসিআরে পরীক্ষা করলেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্পৃক্ততা উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

আরও পড়ুন>> টমেটো ফ্লু : শিশুরাই যখন আক্রান্ত 

এদিকে, চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত যাত্রীদের বিদেশভ্রমণ না করার অনুরোধ জানিয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, করোনাভাইরাসের সাধারণ উপসর্গগুলো হলো- জ্বর, সর্দি, ক্লান্তি, স্বাদ বা গন্ধ হারানো। এছাড়াও আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। সেগুলো হলো- চোখ লাল হওয়া বা চোখ জ্বলা, ত্বকে ফুসকুড়ি বা আঙুল বা পায়ের পাতার বিবর্ণতা, ডায়রিয়া, শরীর ব্যথা ও যন্ত্রণা। তবে কোভিডের গুরুতর উপসর্গগুলো হলো- নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া বা শ্বাসকষ্ট, কথাবলার বা চলাফেরার ইচ্ছা হারানো বা বিভ্রান্তি, বুক ব্যথা।

এটি একটি সেলফ কিউরিং ডিজিজ, ওষুধ ব্যবহার করলে দ্রুত ভালো হয়। তবে অনেক সময় এ ইনফেকশন চোখের কর্নিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে। তাই চোখ উঠলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি কর্নিয়ায় সংক্রমণ না ছড়ায় তাহলে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কর্নিয়ায় ছড়ায় সেক্ষেত্রে ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন। যদি চোখ ওঠার পর কেউ ঝাপসা দেখেন, তাহলে বুঝতে হবে কর্নিয়াতে ছড়িয়েছে। তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

‘বাংলাদেশে কোভিড নমুনা পরীক্ষা মানেই নাক আর গলা’

করোনাবিষয়ক গবেষক ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই চোখ লালচে হওয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। কারণ বিভিন্ন দেশেই প্রতীয়মান হয়েছে যে, চোখ লাল হওয়াও করোনাভাইরাসের অন্যতম একটি উপসর্গ। আমেরিকার অপথালমোলজিক্যাল সোসাইটি বলছে, কারও চোখ লাল হলেই সেখান থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করার জন্য। তারা বলছেন যে এটি কোভিড কনজাংকটিভাইটিস।

আরও পড়ুন>> ঢামেকে সরকারি ইনজেকশন রোগীর কাছে বিক্রি করে দিলেন নার্স

তিনি বলেন, এটা তো (চোখের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা) আসলে বাংলাদেশে হচ্ছে না। আমাদের দেশে কোভিড স্যাম্পল বলতেই বোঝায় নাক অথবা গলা। যে কারণে আমাদেরও এটি প্রমাণ করার সুযোগ নেই যে এটি কোভিড কনজাংকটিভাইটিস। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এবং উপসর্গ বলছে, এটি একেবারে এপিডেমিক আকারে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। একটু খেয়াল করলে দেখবেন যে, কনজাংকটিভাইটিস বিভিন্ন এলাকায় হওয়ার পরপরই কিন্তু এখন কোভিড টেস্টের রেজাল্ট ধাপে ধাপে বাড়ছে।

তবে দেশে চোখ ওঠা কোনো রোগীর করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই এটা হচ্ছে। কিন্তু আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করতে পারিনি। এদিকে যাদের চোখ উঠছে তারা কোভিড টেস্ট করছেন না। এমনকি করলেও ফল নেগেটিভ। কারণ টেস্টগুলো করা হচ্ছে যথারীতি নাক বা গলা থেকে নমুনা নিয়ে। চোখ থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা না করলে তো এটা বোঝা যাবে না।

আশরাফুল হক বলেন, ধরেন এখন একজনের চোখ ওঠার কারণে চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে, ওখান থেকে জাস্ট একটি কটন দিয়ে পানি নিয়ে যদি একটি পিসিআর টেস্ট করানো যেতো তাহলে জানা যেতো সেখানে কোভিডের জীবাণু আছে কি না। প্রচলিত পিসিআর মেশিনে এই টেস্ট করা যাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই করা যাবে। কারণ পিসিআরের জন্য এখন আমাদের যে মেশিন রয়েছে, সে মেশিন কিন্তু নাক-কান-গলা বা চোখ চিনে না। মেশিনের কাজ হলো সে চেক করে দেখবে, তাকে যা দেওয়া হয়েছে সেখানে কোনো ভাইরাস আছে কি না। সমস্যা হলো আমরা এমন একটি প্রটোকল বানিয়ে রেখেছি, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে, কোভিড নমুনা পরীক্ষা মানেই নাক ও গলা। যে কারণে এর বাইরে নতুন কিছু কেউ করতে চায় না।

‘নিম্নমানের মাস্ক থেকে ড্রাই আই, চোখ জ্বালাপোড়া’

এই গবেষক বলেন, কোভিড কনজাংকটিভাইটিসে সব বয়সের মানুষই আক্রান্ত হচ্ছে। কারণ হলো এর আগে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে একটি মাস্ক ব্যবহার করেছি। এগুলোর মধ্যে দামি এবং কোয়ালিটিফুল মাস্ক আমরা খুবই কম ব্যবহার করেছি। বেশিরভাগ সময়ই আমরা সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করেছি। আরে সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করতে গেলে দেখবেন নাক ও মুখের বাতাস বের হচ্ছে দুই চোখের পাশ দিয়ে, যে কারণে আমাদের চোখটাও সবসময় ড্রাই (শুষ্ক) থেকেছে।

তিনি বলেন, কোভিডকালীন সময়ে আমাদের বেশিরভাগ মানুষেরই ড্রাই আই হয়েছে। যখন করোনা চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল, আমরা ছয় থেকে আট ঘণ্টা করে মাস্ক পরতে বাধ্য হয়েছিলাম, তখন আমাদের অনেকেরই চোখ জ্বালাপোড়া করতো। তখনকার আমাদের ছবিগুলো একটু অ্যানালাইসিস (বিশ্লেষণ) করে দেখলেই বুঝতে পারবেন, চোখ গর্ত হয়ে গেছে, চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে, এরকম। আমরা তখন চিন্তা করেছি ঘুম না হওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে, কিন্তু আসলে জিনিসটা এরকম না। আপনি যদি গুগলে ‘আই ডিউ টু মাস্ক’ লিখে একটু সার্চ দিয়ে দেখেন, তাহলে কিন্তু অসংখ্য ড্রাই আই সিনড্রোম দেখতে পাবেন। এই জিনিসগুলো কিন্তু কোভিডের কারণেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন>> সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন কেন জরুরি

‘স্বাভাবিকভাবে আমাদের চোখের যে পরিবেশ থাকে, সেই সময়টাতে সঠিক পরিবেশ ছিল না। কারণ আমাদের নিঃশ্বাসের যেই বাতাসটা, সেটি শুষ্ক। যে কারণে চোখ শুষ্ক হওয়ায় কোভিড চলাকালীন অনেক মানুষেরই চোখের ড্রপ দেওয়া লেগেছে। শুকিয়ে গেলেই চোখ জ্বালাপোড়া করত’, যোগ করেন ডা. আশরাফুল হক।

‘রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় দ্রুত ছড়াচ্ছে চোখ ওঠা’

দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে চোখ ওঠার প্রত্যক্ষ কোনো সম্পর্ক থাকার বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সঙ্গে চোখ ওঠার এখন পর্যন্ত কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। চোখ ওঠা মূলত একটি কনজাংকটিভাইটিস। একটি প্রায়ই হয়, যেমনটা ডায়রিয়া হয়ে থাকে। কোভিডের সঙ্গে সরাসরি কোনো সম্পর্ক না থাকলেও এমন হতে পারে যে, কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহের ইমিউনিটি কমে যাওয়ায় সহজেই চোখ ওঠা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এটিও আমরা কোনোরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া বলতে পারব না।

মুশতাক হোসেন বলেন, করোনাকালীন সময়ে দুই বছর যারা ঘরবন্দি ছিলেন, বিশেষ করে বাচ্চারা একটা দীর্ঘ সময় বাইরে যায়নি, খেলাধুলা করেনি, যে কারণে তাদের দৈহিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমেছে। এমনকি এ কারণে তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যেমন- হেপাটাইটিস, জন্ডিসসহ আরও অনেক রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। চোখ ওঠার বিষয়টিও এরকমই।

তিনি বলেন, চোখ ওঠার পেছনে আরেকটা কারণ থাকতে পারে, সেটি হলো, মানুষ দীর্ঘদিন পর্যন্ত ঘরে আবদ্ধ থাকায় তাদের চোখ ধুলাবালির সঙ্গে তেমন একটা এক্সপোজড হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি বাইরে গিয়ে মানুষ রোদের তাপ আর ধুলাবালিময় আবহাওয়ায় চোখ এক্সপোজড হয়েছে। যে কারণে চোখ ওঠা রোগ দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে। এটা কোভিডের প্রত্যক্ষ কারণ বলা না গেলেও পরোক্ষ কারণ বলা যেতে পারে।

করণীয় প্রসঙ্গে ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, শুধু কোভিডের সংক্রমণ নয়, চোখ ওঠাসহ যেকোনো সংক্রমণ প্রতিরোধেই সাবান দিয়ে হাত ধোয়া জরুরি। কারণ আমরা প্রায় সময়ই হাত দিয়ে চোখ চুলকাই, যেই হাত দিয়ে সারাক্ষণ অন্যদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করি। যাদের এরইমধ্যে চোখ উঠে গেছে, তারা সারাক্ষণ সানগ্লাস পড়ে থাকবে, যেন রোদের তাপটা কম লাগে। আমরা বলি যে, চোখ ওঠা রোগীদের জন্য সানগ্লাস মাস্কের মতো কাজে লাগে। আর যিনি সংক্রমিত, তিনি অন্যের থেকে দূরত্ব বজায় রাখবে। যেহেতু এটা ভাইরাল কনজাংটিভাইটিস, কিছুদিন পর এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পুরোপুরি সুস্থ হতে সময় লাগবে পাঁচ থেকে সাত দিন।

‘চোখ ওঠা ভাইরাল ইনফেকশন, আতঙ্কের কিছু নেই’

চোখ ওঠা রোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত সপ্তাহখানেক ধরে চোখ ওঠা নিয়ে অসংখ্য রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসছে। এছাড়া আমাদের বরিশাল ও চট্টগ্রাম সেন্টার থেকেও চোখ ওঠার সমস্যা নিয়ে রোগী আসার তথ্য পেয়েছি। এটি একটি ভাইরাল ইনফেকশন। এতে আতঙ্কের কিছু নেই। তবে সবাইকে সতর্ক হতে হবে।

আরও পড়ুন>> স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নে করণীয় কী? 

তিনি বলেন, এটি একটি সেলফ কিউরিং ডিজিজ, ওষুধ ব্যবহার করলে দ্রুত ভালো হয়। তবে অনেক সময় এ ইনফেকশন চোখের কর্নিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে। তাই চোখ উঠলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি কর্নিয়ায় সংক্রমণ না ছড়ায় তাহলে নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কর্নিয়ায় ছড়ায় সেক্ষেত্রে ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন। যদি চোখ ওঠার পর কেউ ঝাপসা দেখেন, তাহলে বুঝতে হবে কর্নিয়াতে ছড়িয়েছে। তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

ডা. গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, সব সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে এ রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এ ধরনের সমস্যায় চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে। সতর্কতা হিসেবে সবার উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

করণীয় প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, চোখ ওঠার সঙ্গে হাত ধোঁয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে যাদের এই রোগ হবে, তারা যেন সানগ্লাস ব্যবহার করে তা নিশ্চিত করতে হবে। চোখে রোদ যত কম লাগবে জ্বালাপোড়া তত কমবে। আর অন্যদের মধ্যে ছড়াবে না। এজন্য অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। কারও অবস্থা বেশি খারাপ হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

টিআই/জেডএস