এ ঘটনায় চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

চট্টগ্রামে এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণের পর দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় একটি দেশীয় তৈরি এলজি ও ২টি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (১২ মার্চ) চট্টগ্রাম বাকলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মো. শহিদুল আলম লেদু (৩০), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩০), মো. রায়হান (২৮) ও মো. গিয়াসউদ্দিনকে (২৯) গ্রেফতার করা হয়।

ওসি রুহুল আমিন বলেন, একটি বেসরকারি ব্যাংকের হালিশহর ব্রাঞ্চের কর্মকর্তা শামীম হাসেনের (৩৭) সঙ্গে মোবাইলে এক তরুণীর সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে মার্চ মাসের পাঁচ তারিখ তরুণী শামীমকে বাসায় যেতে দাওয়াত দেন। তরুণীর কথামতো রাহাত্তারপুল পৌঁছে শামীম তরুণীকে ফোন দেন। তরুণী রায়হানকে রাহাত্তারপুল পাঠিয়ে তার সঙ্গে শামীমকে তরুণীর বাসায় যেতে বলেন। 

রায়হানের সঙ্গে শামীম চান্দাপুকুর এলাকার বিসমিল্লাহ টাওয়ারের পেছনের নির্জন স্থানে পৌঁছালে শাহীন, হেলাল, মানিক, সালাউদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন শামীমকে ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে তারা বলতে থাকেন, শামীম অবৈধ সম্পর্ক করতে এসেছেন। তারা শামীমকে গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে স্থানীয় লোকজন জড়ো করে হেনস্থা ও তরুণীকে দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

ওসি রুহুল আমিন আরও বলন, এতে ব্যাংক কর্মকর্তা শামীম রাজি না হলে চাকু আর অস্ত্র ধরে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা। তখন শামীম তার ছোট ভাইকে বিপদে পড়েছেন জানিয়ে দুই লাখ টাকা পাঠাতে বলেন। শামীমের ছোট ভাই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা শামীম বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর বাকলিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাতে নগরীর বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করে ৪ জনকে গ্রেফতার করে। 

পুলিশ জানায়, পেশাদার অপরাধী চক্রটিতে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। বিভিন্ন নারীদের ব্যবহার করে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে তারা মোবাইলে কথার মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। পরে দেখা করার নামে বিভিন্ন বাসা বা নির্জন জায়গায় নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। চক্রটির সদস্যরা চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত। এ চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন বাকলিয়া থানার ওসি মো. রুহুল আমিন। গ্রেফতার চারজনকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

কেএম/এইচকে