বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত অংশ নিতে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। সকাল থেকে দল বেঁধে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠ প্রাঙ্গণের দিকে রওনা হয়েছেন। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের রোড ডাইভারশন থাকায় মুসল্লিরা নানা উপায়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে যাচ্ছেন।

এ সময় কেউ কেউ হেঁটে রওনা হয়েছেন, আবার কেউ কেউ পিক-আপ কিংবা অটোরিকশা ভাড়া করে ইজতেমা মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। এক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাড়ার থেকে কয়েক গুণ বেশি ভাড়ার টাকা মেটাতে হচ্ছে মুসল্লিদের। তবে বেশি ভাড়া দিয়ে যাত্রা করলেও এ নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই তাদের।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর কুড়িল ও খিলক্ষেত এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর প্রগতি সরণি ও বনানী হয়ে ইজতেমাগামী মুসল্লিদের সব বাস এসে খিলক্ষেত থানার সামনে ডাইভারশনের কারণে থামছে। বাস থামার পর মুসল্লিরা একে একে নেমে ইজতেমা মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। মুসল্লিদের ঢলের সারি খিলক্ষেত থানার সামনে থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

আরও দেখা যায়, খিলক্ষেতে গাড়ি থামিয়ে দেওয়া হলেও ডাইভারশনের ভেতরে অর্থাৎ, খিলক্ষেত থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত মুসল্লিদের জন্য পিকআপ ভ্যান ও অটোরিকশার সার্ভিস পাওয়া যাচ্ছে। পিকআপ ভ্যানে খিলক্ষেত থানা থেকে আব্দুলাহপুর পর্যন্ত ১০০-১৫০ টাকা জন প্রতি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে তিন সিটের অটোরিকশায় জন প্রতি ১০০ টা করে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খিলক্ষেত থেকে ইজতেমা মাঠ বা এর আশপাশে যাওয়াটা কিছু কষ্ট হলেও অনেক মানুষ এক সঙ্গে যাচ্ছে বলে কষ্ট বলে মনে হচ্ছে না। লাখো মুসল্লির সঙ্গে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার খুশির থেকে এটা কোনো বড় কষ্ট নয়।

রাজধানীর রামপুরা থেকে নিজের ১২ বছরের সন্তান সিয়ামকে নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে এসেছেন মো. আবুল হাই। তিনি বলেন, কুড়িল বিশ্বরোডে আসার পর রাস্তা বন্ধ থাকায় বাস আর সামনের দিকে যেতে পারেনি। তারপর বাপ-বেটা মিলে হেঁটে রওনা দিয়েছি। আশা করছি ইজতেমা মাঠে না যেতে পারলেও বাপ-বেটা মিলে মাঠের কাছাকাছি কোনো স্থানে আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করতে পারব।

এদিকে খিলক্ষেত থানার সামন থেকে পিকআপ ভ্যান করে আব্দুল্লাহপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তেজগাঁও থেকে আসা মুসল্লিরা। তারা বলেন, কিছুক্ষণ পরই বিমানবন্দর সড়ক পর্যন্ত আখেরি মোনাজাতের কাতার চলে আসবে। তাই ভাড়া একটু বেশি হলেও আগেভাগে যত কাছাকাছি যাওয়া যায় সেই চেষ্টা করছি। আর এক সঙ্গে অনেক মুসল্লি দেখে মনে অনেক আনন্দ লাগছে।

প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের নিজেদের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন জানুয়ারির ২০, ২১ ও ২২ তারিখে। সে হিসেবে এখন যারা মাঠে আছেন তারা সবাই মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী।

এমএসি/কেএ