ইসির সংবাদ সম্মেলন

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে ৪২ নাগরিকের দেওয়া লিখিত অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যের সংবাদ সম্মেলনে সিইসি সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি।

গত ১৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে ইসির বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণ, আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেন দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

ইসির বিরুদ্ধে মূলত প্রশিক্ষণ, কর্মচারী নিয়োগ, গাড়ি ব্যবহার এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনা ও ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন তারা। জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগও উঠে আসে সেখানে। গত কয়েকদিন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি আলোচিত ছিল। কয়েকটি রাজনৈতিক দল ওই অভিযোগে সমর্থনও জানায়। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করলেন সিইসি।   

সব অভিযোগকে 'অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অ্যাখ্যা দিয়ে সিইসি বলেন, ’একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রশিক্ষণে ১৫ জন বিশেষ বক্তার দুই কোটি টাকা বরাদ্দই ছিল না। ফলে অভিযোগটি অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে।’

প্রশিক্ষণে বক্তৃতা না দিয়ে সম্মানী নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন নূরুল হুদা।

ইসি সচিবালয়ের ৩৩৯টি পদে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের জবাবে সিইসি বলেন, ‘কোনো প্রমাণ ছাড়াই ৪ কোটি ৮ লাখ টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত ছিল।’

নির্বাচন কমিশনারদের গাড়ি ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগও অস্বীকার করেন নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘একজন কমিশনারের প্রাধিকারে একটি জিপ ও একটি কার রয়েছে। শপথের দিন থেকে গত ২২ জুলাই পর্যন্ত প্রাধিকারভুক্ত গাড়ি না পাওয়ায় সচিবালয়ের কাজের পাশাপাশি অফিস যাতায়াত ও ভ্রমণের কাজে গাড়িগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়ি পাওয়ার পর কমিশনাররা প্রাধিকারভুক্ত দুটি গাড়িই ব্যবহার করছেন।’

’ইভিএম কেনায় অনিয়ম হয়নি’ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘কমিশন ইভিএম আমদানি করেনি। পিপিআর মেনে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তা কেনা হয়েছে। এর বিল সরকারিভাবে সরাসরি সেনা কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করা হয়।’

জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অসদাচরণ ও অনিয়মের অভিযোগ উড়িয়ে দেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। তারা কোনো অভিযোগ তোলেননি। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। সংবাদমাধ্যমে কোনো গুরুতর অনিয়ম ও অসদচারণের অভিযোগও প্রচার হয়নি।’

'নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা চলে গেছে’ এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।  

এসআর/এসআরএস