জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তেল, চর্বি এবং খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ মাত্রা ২ শতাংশের নিচে রাখার উদ্যোগে প্রবিধানমালা তৈরি হচ্ছে। এটি স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সকলের মতামতের ভিত্তিতে করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রবিধানমালার খসড়াটি চূড়ান্ত হবে।

সোমবার (২২ মার্চ) জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ‘খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা-২০২১’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার এসব কথা বলেন।

খসড়া প্রবিধানমালাটির উপস্থাপন করেন কর্তৃপক্ষের সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. রেজাউল করিম। এতে ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা, সরকারের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা এবং বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ও বিএফএসএ সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালের মধ্যে খাদ্য দ্রব্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আমরা এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে খসড়া প্রবিধানমালাটির প্রণয়ন করেছি। সব ব্যবসায়ী, শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ ভোক্তাসাধারণকে আমাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রবিধানমালাটির ওপর মতামত দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

সভাপতির বক্তব্যে মো. রেজাউল করিম বলেন, ট্রান্সফ্যাট তথা হৃদরোগ ঝুঁকি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এই খসড়া প্রবিধানমালা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

ট্রান্স ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) বা ট্রান্সফ্যাট স্বাস্থ্যের জন্য একটি ক্ষতিকর খাদ্য উপাদান। খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল বা পিএইচও, যা বাংলাদেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামেই সুপরিচিত। সাধারণত বেকারি পণ্য, প্রক্রিয়াজাত করা, ভাজা-পোড়া স্ন্যাক্স, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সড়কসংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে পিএইচও বা ডালডা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ উচ্চহারে হৃদরোগ, হৃদরোগজনিত মৃত্যু, ডিমেনশিয়া এবং স্বল্প স্মৃতিহানি জাতীয় রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২০ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রান্স ফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আশা করছে এই খসড়া প্রবিধানমালাটি বাস্তবায়ন শুরু হলে নিরাপদ খাদ্যে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

এসআর/এমএইচএস