ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লার সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক ঘটনা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের সবচেয়ে কলঙ্কিত ঘটনা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে এ ধরনের জঘন্য ঘটনা পরাজিত শক্তির পরিকল্পিত নীলনকশার অংশ।

সোমবার (২২ মার্চ) ‘শাল্লার নোগাওয়ে সংঘটিত সাম্প্রতিক লুটপাটের ঘটনা স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হীন প্রচেষ্টা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা, দিরাইসহ গোটা হাওর অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, যুগের পর যুগ ধরে হাওরের মানুষ সম্প্রীতির অটুট বন্ধনে আবদ্ধ থেকে জীবন যাপন করছে। একাত্তরেও কেবল শাল্লাতেই হামলা-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল।

তিনি বলেন, একাত্তরের হানাদার বাহিনীর এই দেশীয় প্রেতাত্মারা মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে শাল্লার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখতে হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

তিনি আরও বলেন, শাল্লার ঘটনায় প্রমাণ হয় যে, একাত্তরের লড়াই এখনও শেষ হয়নি। বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের বাংলাদেশে এখনও সেই রাজাকাররা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি মহল ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অপকর্ম করছে। তারা সংবিধানকে অবজ্ঞা করে দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানানোর জন্য কাজ করছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, শাল্লার ঘটনা দেশের সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কর্মকাণ্ড। ইউটিউবের মাধ্যমে সুবর্ণজয়ন্তীর বিরুদ্ধে কথা বলছে একটি মহল। এসব উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। দেশের প্রগতিশীল শক্তিকে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকসহ অনেকে।

একে/আরএইচ