রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ইন্সপেক্টর গাজী মিজানুর রহমানকে (৫২) কুপিয়ে মারাত্মক জখম করার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে তেজগাঁও পুলিশ। সোমবার (২২ মার্চ) দিবাগত রাতে তাদের গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- জামিউল হক মােকাররম ওরফে বুলেট ও হাবিবুর রহমান হাবিব। মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় হাউজিং, চন্দ্রিমা উদ্যানসহ বিভিন্ন হাউজিংগুলোতে মানুষ জায়গা-জমি কিনে কারণ, সহজে কেনা যায়। কিন্তু এসব এলাকায় জায়গা দখল বা বিক্রি করতে গেলে কঠিন হয়ে যায়।

তিনি বলেন, মােহাম্মদপুর বসিলা গার্ডেন সিটিতে মিজানুর রহমান তার বাসা থেকে সিআইডি হেডকোয়ার্টারের উদ্দেশে রওনা দেন। বাসার পাশেই মােহাম্মদপুর গ্রিন সিটি হাউজিং-২ এ নিজ নামে কেনা জমি দেখতে যান।

দুপুর দেড়টার দিকে ওই জমিতে পৌঁছলে আগে থেকে সেখানে পরিকল্পিত ও দলবদ্ধভাবে অবস্থান করা কিছু লোক তার গতিরােধ করে। তারা ধারালাে অস্ত্র, লােহার রড় ও কাঠের লাঠি দিয়ে এলােপাথাড়ি মারপিট শুরু করে। 

ডিসি হারুন বলেন, ওই ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক গাজি মিজানুর রহমান রক্তাক্ত, জখমসহ আহত হন। আসামিরা মিজানুর রহমানকে মেরে তার ব্যবহৃত সরকারি পিস্তল, মোটরসাইকেল, মােবাইল ফোন, নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক গাজী মিজানুর রহমানের স্ত্রী বাদী হয়ে মােহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজন আসামির জড়িত থাকার তথ্য সংগ্রহ করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার দিবাগত রাতে ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি জামিউল হক মােকাররম ওরফে বুলেটকে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। 

প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ও জড়িত অন্যান্য আসামিদের নাম প্রকাশ করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যে এই ঘটনায় জড়িত অপর আসামি হাবিবুর রহমান হাবিবকে মােহাম্মদপুর জাকির হােসেন রােড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে মিজানুর রহমানের নামে ইস্যুকৃত সরকারি ৭.৬২ এমএম পিস্তল ৮ রাউন্ড গুলিসহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরবর্তীতে মােহাম্মদপুর থানায় অস্ত্র আইনে পৃথক মামলা হয়। 

প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের নাম প্রকাশ করেছে। তাদের সহায়তা করা অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, প্রায়ই মোহাম্মদপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরও ৭/৮ জনের নাম জানা গেছে। আদালতে তাদের রিমান্ড চাইব। রিমান্ডে নেওয়া হলে জানা যাবে তারা কার হয়ে কাজ করে। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে যে সকল ভূমিদস্যুদের নাম আসবে তাদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হবে।

জেইউ/ওএফ