বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ, দেশের আভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে অন্যকোনও দেশের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।

তিনি বলেন, আমার দেশে ভোট কীভাবে হবে আমরা বুঝবো। আমাদের ভোটে কেন অন্যান্য দেশের মনিটরিং করতে হবে? কেন অন্যদেশগুলো আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে? 

শনিবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীর বিএসটিআই কার্যালয়ে বিশ্ব মেট্রোলোজি দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাধীন, আমরা অন্য কারও রাজত্বে বসবাস করি না। আমরা রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন করেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা কারও চোখ রাঙানোকে ভয় করি না। আমেরিকাও যদি চোখ রাঙায়, আমরা পরোয়া করি না। 

কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, আমেরিকা আমাদের মানবাধিকার নিয়ে নাক গলায়, অথচ আমেরিকাতেই কোনও মানবাধিকার নাই। স্কুলগুলোতে গুলি করে শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়, সেগুলো কেন তাদের নজরে আসে না? তারাই আবার আমার দেশে এসে হস্তক্ষেপ করতে চায়। এই সুযোগ আমরা দেব না।

খাদ্যে ভেজাল প্রসঙ্গে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি খাদ্য ভেজালে ভরপুর। সাদা চিনি ক্ষতিকর ক্যামিকেল দিয়ে তৈরি হয়। সেটা যদি আমরা ব্যবহার করি তাহলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা আছে। তারা কীভাবে এটি করছে? বিএসটিআই থেকে তো পরীক্ষা করেই তাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, ক্যান্সার রোগ যেভাবে বাড়ছে, সেটি প্রতিরোধ করতে ভেজালবিরোধী অভিযান জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে শিল্প মন্ত্রণালয়কে নতুন আইনের দিকে হাঁটতে হবে। ভেজালকারীদের যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ওজনের ব্যাপারেও নজর দিতে হবে।

কামাল আহমেদ বলেন, গ্রামে-গঞ্জে ভেজাল আরও অনেক বেশি। সেখানেও অভিযান চালাতে হবে। মফস্বল শহরগুলোতে চালাতে হবে। প্রয়োজনে আমাদের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, প্রবাদ আছে, ‘যারা নিয়মিত ট্যাক্স দেয়, তাদের ওপরও প্রেসার বেশি আসে’। আমিও মনে করি দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের একটু বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়, এতে করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। খাদ্যের মজুদ করা যাবে না, এবিষয়েও আমাদের কাজ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা লাগবে। এক্ষেত্রে ক্রাইম রিপোর্টারদের এগিয়ে আসতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, গতকাল টিভিতে দেখলাম ব্যাটারি তৈরির কারখানা, এমনভাবে এমন জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এবিষয়গুলো আমাদের নজরে আসছে না। আমি মনে করি বিএসটিআইয়ের আলাদা মনিটরিং সেল থাকা উচিত। এই সেলে যারা থাকবেন, তারা পত্রিকা-টেলিভিশন দেখবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএসটিআইয়ে কোনও মনিটরিং সেল নেই। তাদের বলবো দেশের প্রতিটি পত্রপত্রিকা নিয়মিত রাখতে হবে। সেগুলোতে কোথায় কী দুর্নীতি-অনিয়ম হচ্ছে দেখতে হবে এবং দ্রুততম সময়ে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

বিএসটিআই মহাপরিচালক আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানসহ আরও অনেকে।

টিআই/এসএম