নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকে অ্যাম্বুলেন্সের চাবি গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। উদ্বোধন করা হয়েছে কয়েকটি প্রকল্প।

শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। সমঝোতা সই ও প্রকল্প উদ্বোধন ছাড়াও বাংলাদেশকে ভারতের পক্ষ থেকে ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স ও ১২ লাখ করোনা টিকা উপহার দেওয়া হয়েছে। সেখানে অ্যাম্বুলেন্সের চাবি ও টিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

শনিবার বিকেল ৫টায় নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আসেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। দুই নেতার উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক সই হয়।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, সংযোগ, শক্তি, উন্নয়ন সহযোগিতা এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে অর্জনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন।

মিতালী এক্সপ্রেস-এর উদ্বোধন

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন আন্তঃদেশীয় ট্রেন 'মিতালী এক্সপ্রেস' উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মিতালি এক্সপ্রেসের যৌথভাবে উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উভয় দেশের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলে এই ট্রেন চলাচল শুরু করবে। আজ শুধুমাত্র উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে যান নরেন্দ্র মোদি। সেখানে তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান রাষ্ট্রপতি। দুদিনের সফর শেষে আজ রাতেই দিল্লি ফিরে যাবেন মোদি।

বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা

ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে এ উপলক্ষে ট্রেনটি সাজানো হয়। এ সময় ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ভুবন চন্দ্র বিশ্বাসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিমানবন্দরে তাকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। সেখানে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নরেন্দ্র মোদি। বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

সেখানে দেওয়া বক্তব্যে বাংলাদেশ-ভারত সামনের দিনগুলোতে যৌথভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নরেন্দ্র মোদি। এরপর রাতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের মহাত্মা গান্ধীর সম্মানে তৈরি করা বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল জাদুঘর উদ্বোধন করেন।

সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পরিদর্শন করেন এবং পূজা দেন। পরে হেলিকপ্টারে টুঙ্গিপাড়ায় যান। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নরেন্দ্র মোদি। সমাধি কমপ্লেক্স ঘুরে দেখার পর পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর এবং বঙ্গবন্ধু ভবনের পাশে একটি বকুল গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।

পরে কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাকে উলুধ্বনি, শঙ্খ ও ডঙ্কা-কাঁসা বাজিয়ে বরণ করে নেন ঠাকুরবাড়ির মতুয়ারা। সেখানে তিনি পূজা-অর্চনা করেন। পরে তিনি ঠাকুরবাড়ির সদস্য ও মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এফআর