পার্বত্যাঞ্চলের শান্তি নিয়েও ষড়যন্ত্র হয়: তথ্যমন্ত্রী
‘বঙ্গবন্ধু ট্যুর ডি সিএইচটি মাউন্টেন বাইক’ প্রতিযোগীতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের শান্তি বিনষ্ট করার জন্য যেমন ষড়যন্ত্র হয়, তেমনি পার্বত্য চট্টগ্রাম ও এ এলাকার শান্তি নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়। যারা দেশের উন্নয়ন ও শান্তিতে খুশি না, তারা পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়ন, স্থিতি এবং শান্তিতেও খুশি না। এর বহিঃপ্রকাশ আমরা মাঝে মধ্যেই দেখতে পাই। এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুর ডি সিএইচটি মাউন্টেন বাইক’ প্রতিযোগীতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যখন বিএনপি ও এরশাদ ক্ষমতায় ছিল তখন শান্তিচুক্তি করা এবং এটি বাস্তবায়নে হাতও দেওয়া হয়নি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে শান্তিচুক্তি করেছেন এবং সেটি বাস্তবায়ন করে চলেছেন। যারা অশান্তির কারণে দেশত্যাগ করেছিলেন তাদের ফিরিয়ে এনেছেন। যারা ভিন্ন পথে গিয়েছিল তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য সম্ভব হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম বদলে গেছ। বাংলাদেশের অন্য এলাকার চেয়ে পার্বত্যাঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া প্রকৃতপক্ষে অনেক বেশি। কারণ এখানে সরকার অধিক মনযোগী।
বিজ্ঞাপন
দেশের উন্নয়নে ট্যুরিজমের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলসহ পুরো চট্টগ্রামে ট্যুরিজমের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই সাইক্লিং ট্যুরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের নাম এবং এখানকার ট্যুরিজমের যে সম্ভাবনা রয়েছে সেটা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। পৃথিবীর অনেক দেশ ট্যুরিজমকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন ঘটিয়েছে। আমাদের দেশে ট্যুরিজমের যে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে তা যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি তাহলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। সেজন্য প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আর সেটি সরকার অনেক করেছে।
করোনাভাইরাসের মধ্যেও মুজিব শতবর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে মাউন্টেন বাইকিংয়ের আয়োজনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা সাইক্লিং করেন তারা ছাড়া অন্য কেউ এখানে সাইক্লিং করার তৃপ্তি প্রকাশ করতে পারবেনা। আমি ছাত্রজীবনে নিজেও সাইকেল চালিয়ে ইউনিভার্সিটি যাওয়া আসা করতাম। সে কারণে আমি নিজেও সাইক্লিংয়ের ভক্ত।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের তরুণদের যদি আমরা গড়ে তুলতে চাই, তাহলে ক্রীড়া প্রতিযোগীতাসহ সাইক্লিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসক্তি ও মাদকের হিংস্র থাবা থেকে তরুণদের বের করে আনার জন্য ব্যাপক আকারে ক্রীড়া প্রতিযোগীতা, সাইক্লিং ট্যুরসহ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আয়োজন করার কোনো বিকল্প নেই।
‘বঙ্গবন্ধু ট্যুর ডি সিএইচটি মাউন্টেন বাইক’ প্রতিযোগীতায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮শ ফুট উপরের সাজেক থেকে রওনা দিয়ে উঁচুনিচু ৩শ কিলোমিটার পাহাড় পাড়ি দিয়ে তারা থানচি পৌঁছাবেন প্রতিযোগীরা। এই প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে প্রায় ৭শ জন আবেদন করেছিলেন। এদের মধ্য থেকে বাছাই করা হয়েছে ৫৫ জনকে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব সফিকুল আহম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি, শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, মহিলা এমপি বাসন্তি চাকমা, ব্রিগেড কমান্ডার ফয়েজুর রহমান, দীঘিনালা উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম প্রমুখ।
সাজেক ভ্যালিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ট্যুর ডি সিএইচটি মাউন্টেন বাইক’ প্রতিযোগীতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।