চলমান কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনেই এক সপ্তাহের জন্য গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার (৭ এপ্রিল) ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা চালু থাকবে গণপরিবহন। এবার আন্তঃজেলা বাস চলাচল দ্রুত চালুর জন্য সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছেন সড়ক পরিবহন খাতের শীর্ষ নেতারা। যদিও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান দূরপাল্লার বাস বন্ধ রাখার পক্ষেই।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পণ্য পরিবহন চলাচল করবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, তৈরি পোশাক কারখানা, দোকানপাট, বাজার কিছুই বন্ধ নেই। সারা দেশের তুলনায় ঢাকায় বাস চলাচল করে কম। অথচ কেউ বলতে পারবে না দূরপ্লালার বাসে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। নগর পরিবহন চালু করা হলে দূরপাল্লার বাসও চালু করা দরকার। কারণ তা না হলে হাজার হাজার শ্রমিক জীবিকা সংকটে পড়বে। আমরা এজন্য সীমিত আকারে দূরপাল্লার বাস চালুর দাবি জানাই। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্ত অবশ্যই পালন করতে হবে।

ওসমান আলী বলেন, শহর এলাকায় নগর পরিবহন চালু করতে সরকারকে আমরা বলেছিলাম। সরকার সেটি মেনেছে। এটি মন্দের ভালো। আমরা দুয়েক দিনের মধ্যে পরিবহন মালিক শ্রমিক নেতারা বৈঠকে বসব। তারপর সরকারের কাছে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন সীমিত পরিসরে চালুর জন্য দাবি জানাবো। কঠোর বিধিনিষেধের সময়সীমা সরকার বাড়ালে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য সহায়তা দিতে হবে।

এর আগে মঙ্গলবার (০৬ এপ্রিল) বিকেলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম মহানগরসহ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রাজশাহী, খুলনা,সিলেট, বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকাধীন সড়কে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অর্ধেক আসন খালি রেখে গণপরিবহন চলাচল করবে। এরপর থেকেই দূরপাল্লার বাস চলাচল চালুর দাবি তোলেন পরিবহন নেতারা।

মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য অংশীজনদের সঙ্গে কোনো বৈঠক করা হয়নি। এবার নগর পরিবহন চালুর জন্য নির্দেশনা এসেছে। দূরের বাসগুলো চালাতে তাহলে সমস্যা কোথায়? দূরের বিভিন্ন রুটে এমনিতেই যাত্রী পাওয়া যায় না। লোকসান দিতে হয় অনেক বাস কোম্পানিকে।  এ ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান আমাদের। সারা দেশে বাসের তুলনায় ঢাকায় মাত্র ৫ শতাংশ বাস চলাচল করে। এসব বাসের চেয়ে দূরপাল্লার বাসে স্বাস্থ্যবিধি বেশি মানা হয়।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও জনসাধারণের যাতায়াতে দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চলাচলের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তবে দূরপাল্লার বাস চলাচলের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ আমরা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। বিকেলে ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত জেনেছি। তবে দূরপাল্লার বাস চালুর বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিএসডি/এসকেডি