রফিকুল ইসলাম

রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামকে নেত্রকোনা থেকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা।

র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক ইমরান খান বুধবার (৭ এপ্রিল) ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা জায়গায় তার পরিচিত ও ভক্তরা অভিযোগ করে আসছিলেন, বুধবার (০৭ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে ‘শিশুবক্তা’ মাওলানা রফিকুল ইসলাম নেত্রকোণাকে তার নিজ বাসা থেকে র‍্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। এছাড়া মাওলানা রফিকুল ইসলামের সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘আমাকে গুম করার চেষ্টা চলছে।’

এরপর দুপুরের দিকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন ‘মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী র‌্যাবের নিরাপত্তায় রয়েছে মর্মে নিশ্চিত হয়েছি।‌ অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি।’

গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় রয়েল রিসোর্ট মাওলানা মামুনুল হকসহ এক নারীকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুক লাইভে এসে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী মামুনুল হকের সমর্থনে কথা বলেন।

এ বিষয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (এএসপি) ইমরান খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ ভোরে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নেত্রকোণা পূর্বধলা থেকে আটক করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে তাকে নেত্রকোনায় হস্তান্তর করা হবে।

পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলা হলে অবশ্যই থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে গত ২৫ মার্চ রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের মোদিবিরোধী মিছিল থেকে ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামকে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছিল। পরে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়

মোদিবিরোধী মিছিল থেকে ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল

ওই দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ঘিরে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের একটি মিছিল রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় শুরু হয়। এতে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। মিছিলটি মতিঝিলে যাওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় রফিকুল ইসলামকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছিল

রফিকুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণায়, থাকেন গাজীপুরে। তিনি নেত্রকোণার পশ্চিম বিলাশপুর সাওতুল হেরা মাদরাসার পরিচালক।

রফিকুল ইসলামের বয়স ২৬ বছর। নিজের নামের সঙ্গে ‘শিশুবক্তা’ শব্দটি ব্যবহারে আপত্তি জানান তিনি নিজেই। বিভিন্ন সময়ে ওয়াজে তার নামের সঙ্গে ‘শিশুবক্তা‘ ব্যবহার না করারও অনুরোধ জানান তিনি। ওয়াজে নিজের বয়স সম্পর্কে রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৯৫ সালের শেষের দিকে আমার জন্ম। এখনও আমাকে শিশুবক্তা বানিয়ে রাখবেন কেন? আমি ছয় বছর বয়স পর্যন্ত বাড়িতে পড়াশোনা করেছি। তারপর ক্লাস সিক্স পর্যন্ত স্কুলে পড়েছি। এরপর মাদরাসায় ভর্তি হই। নূরানিতে পড়েছি এক বছর। আল্লাহ রহমতে দুই বছরে হেফজ শেষ করেছি। এখানে তিন বছর, আগের ১২ বছর মোট হলো ১৫ বছর।  এরপর আট বছর কিতাবখানায় পড়েছি।

এআর/এমএসি/ওএফ/এসএম