প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক

হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের হয়রানি করলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল এবং সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে 'হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২০' এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন তিনি।

আর সচিবালয় থেকে অংশ নেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সিসহ মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা বৈঠকে অংশ নেন।

দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'অনিয়মের জন্য হজ এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল করা যাবে এবং সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। ওমরাহ এজেন্সির ক্ষেত্রে নিবন্ধন বাতিল ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। ক্রিমিন্যাল অফেন্স (ফৌজদারি অপরাধ) করলে পেনাল কোড বা অন্যান্য আইনে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া যাবে। আর অপরাধের জন্য কোনো হজ এজেন্সিকে যদি পরপর দুই বছর সতর্ক করা হয় তাহলে লাইসেন্স দুই বছরের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল থাকবে।'

হজ এজেন্সির অনিয়মের ব্যাখায় তিনি বলেন, 'হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করা; হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের হয়রানি, ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতিসাধন; অসত্য তথ্য ও প্রতারণার মাধ্যমে নিবন্ধন; আইন বিধি ও সরকারের জারি করা নির্দেশনা ও নিবন্ধন শর্ত লঙ্ঘন।'

এ আইনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এতোদিন হজ ব্যবস্থাপনা চলতো একটা নীতিমালার মাধ্যমে। নীতিমালার মাধ্যমে চলার কারণে অনেক সময় কিছু ব্যবস্থা নিতে অসুবিধা হতো। ব্যবস্থা নিলে তারা আবার হাইকোর্টে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসতো। আর ২০১১ সাল থেকে সৌদি আরব হজ ব্যবস্থপনাকে পরিবর্তন করে ফেলেছে। পাকিস্তান, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া আইন করে ফেলেছে। হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে আমাদের ইকুপ্ট করতে গেলে একটা আইনি কাঠামোর প্রয়োজন। সেজন্য ২০১২ সালের মন্ত্রিসভার নির্দেশনা ছিল নীতিমালার পরিবর্তে আইন নিয়ে আসার। সেটাই আজকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।'

আইনের উদ্দেশ্য নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়িত্ব সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকবে। সরকার হজ ও ওমরা ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে রাজকীয় সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি, সমঝোতার ভিত্তিতে সৌদি আরবের যেকোনো স্থানে হজ অফিস স্থাপনসহ সার্বিক কার্যক্রম নিতে পারবে।'

আইনের অধীনে নিবন্ধন ছাড়া কেউই কোনো ওমরা বা হজের কোনো লোকজনকে হ্যান্ডেল করতে পারবে না জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'যদি কেউ এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম করে তাহলে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত তদন্ত এবং শুনানির সুযোগ দিয়ে হজ ও ওমরা এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। হজের চুক্তি এখানে হওয়ার পর কেউ যদি ওই দেশে থাকে তাহলে এদেশে অপরাধ হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।'

কোনো হজ বা ওমরা এজেন্সিকে কোনো অনিয়মের কারণে পর পর দু’বছর সতর্ক করা হলে তার লাইসেন্স দুই বছরের জন্য বাতিল থাকবে। সরকার দৈব, দুর্বিপাক, মৃত্যু, দুর্ঘটনা, হজযাত্রীদের আকস্মিক প্রয়োজনে আপদকালীন তহবিল গঠন করার কথা আইনে উল্লেখ রয়েছে বলে জানান সচিব। 

এসএইচআর/এসএম