গত ৫ এপ্রিল সাতদিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করলেও ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের মুখে শুক্রবার সকাল থেকে শর্তসাপেক্ষে শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দিয়েছে সরকার। প্রথম দিন বিকেলে জনতার ঢল নেমেছে নিউমার্কেট এলাকায়।  স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।

শুক্রবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এখানকার মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। বরং ছুটির দিনের কেনাকাটা করতে এসব মার্কেটে মানুষের ব্যাপক জনসমাগমের কারণে মিরপুর রোডে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, নীলক্ষেতের বইয়ের দোকান, চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্সসহ ছোট-বড় মার্কেটগুলোতে প্রবেশের সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা কোনো ধরনের জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। এসব মার্কেটের প্রবেশপথে জীবাণুনাশক টানেল থাকলেও সেগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অকার্যকর।

তাছাড়া মার্কেটের ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই মাস্ক ব্যবহারে ছিল অনীহা। প্রচণ্ড ভিড় ও মানুষের চাপ থাকায় চাইলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন সুযোগ ছিল না। বিপুল মানুষের সমাগম হওয়ায় নিউমার্কেট এলাকার ফুটওভার ব্রিজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাঁটাই সম্ভব হচ্ছিল না।

গাউছিয়া মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, সারাদিন মাস্ক পরে থাকা যায় না। বিক্রির স্বার্থেই মাস্ক খুলে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলতে হয়। তবে দোকানে যেসব ক্রেতারা আসছেন তাদেরকে জীবাণুনাশক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়েই আসতে হচ্ছে।

নীলক্ষেতের বইয়ের দোকান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধির দেখা মেলেনি। হাসান জামিল নামে এক ক্রেতা বলেন, এত মানুষের ভিড়ে চাইলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব না। আর মানুষকে জোর করে মাস্ক পরানো যাবে না। তারপরও সবার সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করা উচিত।

চাঁদনী চক বিজনেস ফোরামের সভাপতি নিজাম উদ্দিন জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দোকানপাট ও মার্কেট চলছে। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি যেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। আর মাস্ক ছাড়া কাউকেই মার্কেটে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, গত ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত মোট সাতদিন শপিংমল, দোকানপাট ও বিপণিবিতান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে দেশের সব দোকানপাট, শপিংমল, মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। যা আগামী মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) পর্যন্ত বহাল থাকবে। নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এসব শপিং মল, দোকানপাট ও মার্কেট খোলা রাখতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।

আরএইচটি/ওএফ/জেএস