মতিঝিল এলাকার সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের প্রয়াত পীর সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগীর নামাজে জানাজা মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা ঘিরে তার ভক্ত-অনুসারীরা ভিড় করছেন রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলে। 

এতে যানবাহন ও পথচারীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় মতিঝিল এলাকায় যানবাহন চলাচল সীমিত করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।

দেওয়ানবাগের পরিচালক ড. আরসাম কুদরত এ খোদা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে দেওয়ানবাগী পীর ৩ নম্বর প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি সেনাবাহিনীর ১৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টে রিলিজিয়াস টিচার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য জানাজা শেষে দেওয়ানবাগী পীরকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। জানাজা শেষে দেওয়ানবাগী পীরকে বাবে মদিনা দেওয়ানবাগ শরীফে তার স্ত্রীর পাশে সমাহিত করার কথা রয়েছে।

ডিএমপি’র মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার(ডিসি) ওয়াহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেওয়ানবাগী পীরের দেশ-বিদেশে অনেক অনুসারী ও ভক্ত রয়েছেন। তার মৃত্যুর পর আজ জানাজা ঘিরে চাপ বেড়েছে মতিঝিলে। জানাজা সুস্থভাবে সম্পন্ন ও যাতায়াতকে স্বাভাবিক রাখতে এবং সড়কে যেন জট তৈরি না হয় সেজন্য যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। বড় বড় যানবাহনগুলোকে মতিঝিলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বিকল্প সড়কে ডাইভারসন করে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে দেওয়ানবাগী পীরের বাড়ির সামনে অতিরিক্ত ট্রাফিক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জানাজার কিছু সময় পরও ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা ৪৮ মিনিটে ইন্তেকাল করেন দেওয়ানবাগী পীর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। সকাল পৌনে ৭টার দিকে তিনি নিজ বাসায় স্ট্রোক করেন। পরে ইউনাইটেড হাসাপাতালে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দেওয়ানবাগ দরবার শরিফের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, দেওয়ানবাগী পীরের নাম মাহবুব-এ খোদা। তবে তিনি ‘দেওয়ানবাগী’ নামে পরিচিত। ১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুর রশিদ সরদার। মা সৈয়দা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নিজ এলাকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

ফরিদপুরে চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতান আহমেদ চন্দ্রপুরীর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন দেওয়ানবাগী পীর। এরপর তার মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন দেওয়ানবাগী। এর সুবাদে শ্বশুরের কাছ থেকে খেলাফত লাভ করেন।

তার কিছু দিন পর নিজেই নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানবাগ নামক স্থানে একটি আস্তানা গড়ে তোলেন এবং নিজেকে সুফি সম্রাট পরিচয় দিতে থাকেন মাহবুব-এ খোদা। ধীরে ধীরে তার অনুসারি বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে মতিঝিলের ১৪৭ আরামবাগে স্থায়ী দরবার গড়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন দেওয়ানবাগী।

জেইউ/জেডএস