লাখকে হাজার বানিয়ে ভ্যাট ফাঁকির ফন্দি
জৈনপুর ফার্নিচারে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের অভিযান
রাজধানী মিরপুরের বেগম রোকেয়া সরণীতে জৈনপুর ফার্নিচারের একটি দোকানে এক মাসে ৩৩ লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে। অথচ নথিপত্রে মাত্র ৩৩ হাজার টাকা বিক্রি দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ভ্যাট নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা অধিদফতরের এক অভিযানে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, সোমবার এক ক্রেতার দায়ের করা অভিযোগে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল ওই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়। অভিযানে জব্দ করা দলিলগুলো যাচাই করা হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়েছে। আরো তদন্ত করে অভিযোগ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য তিনি।
ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিযোগকারী বলেন বেগম রোকেয়া সরণীর জৈনপুর ফার্নিচারের দোকান থেকে তিনি ফার্নিচার কিনেছিলেন। এসময় তাকে ভুয়া ভ্যাট চালান দেওয়া হয়। এতে সন্দেহ হলে তিনি ভ্যাট গোয়েন্দার নিকট অভিযোগ করেন। কাস্টমারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাট গোয়েন্দার দল অনুসন্ধান করে দেখতে পায়, প্রায় এক বিঘা জায়গার উপর গড়ে ওঠা এ ফার্নিচার দোকানটি বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে।
বিজ্ঞাপন
অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধিত হলেও ভুয়া ও ডুপ্লিকেট চালান ব্যবহার করে তারা ফার্নিচার বিক্রি করছে। ভ্যাটের জন্য তারা ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্টস সংরক্ষণ করছে। এতে স্থানীয় ভ্যাট সার্কেলে প্রকৃত বিক্রয় গোপন রেখে নামমাত্র বিক্রির তথ্য ঘোষণা করছে। ফলে কাস্টমার থেকে সংগৃহীত ভ্যাট সরকারের কোষাগারে জমা হচ্ছে না। অভিযানকালে ফার্নিচারের দোকান থেকে বাণিজ্যিক দলিলাদি জব্দ করে গোয়েন্দা দল। এতে দেখা যায়, কেবল মার্চ ২০২০ এ তাদের প্রকৃত বিক্রি ছিল ৩৩ লাখ টাকা। কিন্তু তারা মিরপুর সার্কেলে রিটার্নে দেখিয়েছে মাত্র ৩৩ হাজার টাকা। অপ্রদর্শিত বিক্রয় ৩২.৬৭ লাখ টাকা। এক মাসেই ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা।
গোয়েন্দা দলটি মিরপুরের শেওড়াপাড়ার হোমউড ফার্নিচার নামে অন্য একটি ফার্নিচার দোকানেও অভিযান পরিচালনা করে। ওই প্রতিষ্ঠানেও হিসাব গোপনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ অভিযানে হোমউড ফার্নিচার থেকে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর ২০২০ মাসের প্রকৃত বিক্রির তথ্য উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা তথ্যে দেখা যায় যে, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ভ্যাট অফিসে বিক্রয় দেখানো হয়েছে যথাক্রমে ২৫ ও ৬৪ হাজার টাকা। কিন্তু ওই দুই মাসে প্রকৃত বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ও ১৯.২৯ লাখ টাকা।
আরএম/এমএইচএস