দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশন। 

প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শেষ হলে রূপপুরের এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ছয় কোটি মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্পটি মেগাপ্রকল্পের তালিকাভুক্ত।  

দেশের সব মেগাপ্রকল্পের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে প্রতিমাসে প্রতিবেদন তৈরি করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। ইআরডি প্রতিমাসে প্রতিবেদন তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায়। ইআরডির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ মেগাপ্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৩৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব সংশোধিত এডিপি (উন্নয়ন কর্মসূচি) বাস্তবায়নের ওপর পড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এর মধ্যেও মেগা প্রকল্পগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থায় কার্যক্রম চলছে। ভেতরে লোকজনকে রেখেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। বছর শেষে প্রকল্পটির অর্থ ব্যয় আরও বাড়বে।

ইআরডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে। চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) এ প্রকল্পের অনুকূলে মোট বরাদ্দ ছিল ১৫ হাজার ৬৯১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সংশোধিত এডিপিতে পাঁচ হাজার ৫২৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা কমিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার ১৬৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে পাঁচ হাজার ১৯১ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে একটি কেন্দ্র থেকেই দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। পুরোদমে এ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হলে ২৪ থেকে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। অর্থাৎ বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থান হবে বিপুল জনগোষ্ঠীর। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটে ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর ব্যবহার হয়েছে। যার মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট।

এসআর/আরএইচ