করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দেশজুড়ে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন চলাচল। তবে ঈদুল ফিতরের আগেই দেশে গণপরিবহন চালুর চেষ্টা করছেন পরিবহন নেতারা।

পরিবহন নেতাদের যুক্তি, চলমান সর্বাত্মক বিধিনিষেধের মধ্যেও রাজধানীসহ দেশব্যাপী সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ অন্য ছোট যানবাহন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাড়তি অর্থ খরচ করে এসব যানবাহনে যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অন্যদিকে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়ত লোকসান গুনতে হচ্ছে গণপরিবহনের মালিক, চালকসহ সংশ্লিষ্টদের।  

আরও পড়ুন : সড়কের ৭০ শতাংশই পার্কিং করা বাসের দখলে

এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদুল ফিতরের আগেই গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর আবেদন করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে পরিবহন নেতারা নিয়মিত গণপরিবহন চালুর দাবি জানাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা গত মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঈদুল ফিতরের আগে গণপরিবহন চালুর দাবিতে আবেদন করেছি। আমাদের সংগঠনের সভাপতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। চলমান সর্বাত্মক বিধিনিষেধের কারণে পরিবহন খাতের কমপক্ষে ৫০ লাখ শ্রমিক চরম কষ্টে আছেন।

আজ (২৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলীসহ পরিবহন নেতারা বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে পুনরায় সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করায় প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের বেঁচে থাকার মতো অবলম্বন নেই। গাড়ি চললে পরিবহন শ্রমিকদের সংসার চলে। উপার্জনের পথ বন্ধ থাকায় পরিবহন শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকার যন্ত্রণা পরিবহন শ্রমিকদের কাছে করোনা সংক্রমণের ভয়ের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন : বিধিনিষেধে ফাঁকা সড়কে সিএনজির দাপট

তারা বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের সবসময় গণমানুষের সংস্পর্শে থাকতে হয়, তারা যেমন করোনা সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন তেমনি যাত্রীরাও ঝুঁকিতে থাকেন। সেই বিবেচনায় গণপরিবহন বন্ধ রাখা যুক্তিসংগত। একইসঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের জীবিকার নিশ্চয়তার বিধানও করতে হবে। গার্মেন্টস, শপিং মল, কাঁচাবাজার ইত্যাদি খোলা রেখে শুধুমাত্র গণপরিবহন বন্ধ রেখে লকডাউন কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যাত্রী সাধারণ অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, এমনকি মিনি ট্রাকসহ প্রভৃতি যানবাহনে দূরদূরান্তে চলাচল করছেন। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। অন্যদিকে তাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ও নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তার চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচলের সুযোগ করে দিলে যাত্রীদের করোনা ঝুঁকি কমবে।

পিএসডি/এসকেডি