জনসমাগম বাড়লেও বিক্রি বাড়েনি
করোনার কারণে চলমান বিধিনিষেধ শিথিল করে দোকানপাট শপিংমল খুলেছে আগেই। এতদিন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সেই অর্থে বেচাবিক্রি হয়নি। গণপরিবহন চালুর পর শপিংমলে জনসমাগম বেড়েছে। তবে বিক্রেতাদের দাবি, মানুষের সমাগম বাড়লেও বিক্রি বাড়েনি।
শুক্রবার (৭ মে) রাজধানীর নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, গাউছিয়া মার্কেট এলাকা ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, গতকাল (৬ মে) বাস চালু হওয়ার পর মার্কেটে লোকসমাগম বেড়েছে। যে পরিমাণে লোকজন মার্কেটে ঘুরছেন সে হিসেবে বিক্রি হচ্ছে না।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, নিউমার্কেটের প্রবেশদ্বারগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। অনেকটা ধাক্কাধাক্কি করেই ক্রেতারা মার্কেটে ঢুকছেন। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক পরা থাকলেও শারীরিক দূরত্বের কোনো চিহ্ন নেই। উল্টো গায়ে গা ঘেঁষে তারা মার্কেটে ঢুকছেন।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, মার্কেটের ভেতরে অযথা ঘোরাঘুরি ছাড়াও কেউ কেউ বসে আড্ডা জমিয়েছেন। কেউ কেউ মাস্ক ছাড়া অযথাই হাঁটছেন।
নিউমার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী জলিল ভূঁইয়া বলেন, আরও আগে বাস চালুর দরকার ছিল। আমাদের কাস্টমাররা তো প্রথম কয়দিন ঘুরতে আসে। এরপর কেনাকাটা করে। গতকাল থেকে কাস্টমার আসতে শুরু করেছে। বিক্রি এখনো বাড়েনি।
মার্কেটে আসা মানুষদের দাবি, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেই তারা মার্কেটে এসেছেন। পছন্দের জিনিসটি ন্যায্য মূল্যে কিনতে একটু ঘোরাঘুরি করতেই হয়। ক্লান্ত অনুভব করছেন বলে বসে কিছুটা জিরিয়ে নিচ্ছেন।
মিরপুরের গোলারটেকের বাসিন্দা হাবিবুর। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি জানান, বাচ্চার জন্য কিছু কেনাকাটা করতে এসেছেন। বাস চলাচল না থাকায় এই কয়দিন আসতে পারেননি।
হাবিবুর বলেন, খুব বেশি সময় নেব না। কেনাকাটা করেই চলে যাব। মার্কেটে এত ভিড় জানলে আসতাম না।
এলিফ্যান্ট রোডের জুতা বিক্রেতা কিশোর বলেন, যা বিক্রি হচ্ছে তাতে দোকান ভাড়াও উঠবে না। এত মানুষ মার্কেটে কিন্তু বিক্রি তো বাড়ছে না।
এদিকে গণপরিবহন চালু হলেও রাজধানীর ইসলামপুরের পাইকারি দোকানগুলোতেও বিক্রি নেই বলে ঢাকা পোস্টের এক সরেজমিন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। শুক্রবার সেখানকার একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ঈদকে সামনে রেখে দোকানে বেচাকেনা ভালো হবে এমন আশা ছিল। কিন্তু বিধিনিষেধের কারণে খুব খারাপ অবস্থা। পাইকারি বিক্রি নেই বললেই চলে। মাঝেমধ্যে দুয়েকটা খুচরা বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগ মুহূর্তে যদি ব্যবসার এ অবস্থা হয় তাহলে দোকান বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
ইসলামপুরের পাইকারি বিক্রেতা ছোঁয়া ভার্শনের স্বত্বাধিকারী মোশাররফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউনের কারণে আমরা শেষ হয়ে গেছি। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে পথে বসা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। আগে ঈদকে সামনে রেখে দোকানের ৯০% পণ্য বিক্রি হয়ে যেত। এবার সব মিলে ১০% পণ্যও বিক্রি করতে পারিনি।
এইউএ/এফআর/জেএস